কারামুক্ত হলেন সেই মানসিক প্রতিবন্ধী

গাঁজার গাছসহ গ্রেপ্তার এক সহযোগীকে বাঁচাতে পাবনার সুজানগর উপজেলার নাজিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান খানের যোগসাজশে জেলে পাঠানো মানসিক প্রতিবন্ধী আফছার মোল্লা (৪০) মুক্তি পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) রাতে পাবনা জেলা কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত পান তিনি।
এর আগে গত মঙ্গলবার (১ মার্চ) ‘সহযোগীকে বাঁচাতে মানসিক ভারসাম্যহীন আফছারকে ফাঁসালেন চেয়ারম্যান’ শিরোনামে ঢাকা পোস্টে সংবাদ প্রকাশিত হয়। বৃহস্পতিবার সংবাদটি আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতের নজরে নিয়ে আসলে বিচারক আফছারের জামিন মঞ্জুর করেন। তবে ঘটনার মূল আসামি হালিম শেখের (৫০) জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
আফছারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আকির হোসেন শিকদার (পান্না) ঢাকা পোস্টকে বলেন, সংবাদটি পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-৬ এর বিচারক সুমাইয়া ইসলামের নজরে আনা হয়। বিচারক সেটি দেখে সঙ্গে সঙ্গেই জামিন মঞ্জুর করেন।
সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আফছারের স্ত্রী শাহিদা খাতুন বলেন, আমরা একেবারেই অসহায়। তারপর আবার বাড়ির পাশের চেয়ারম্যান নিজেই আমার স্বামীকে ফাঁসিয়েছিল। আপনারা এগিয়ে না আসলে আমার স্বামী এতো দ্রুত মুক্তি পেত না। আমরা আপনাদের কথা ভুলবো না।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মাদক মামলায় মানসিক প্রতিবন্ধী আফছার মোল্লাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পাবনার সুজানগর থানা পুলিশ। এর পেছনে নাজিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান খানের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
মূল অভিযুক্ত হালিম শেখ নওয়াগ্রামের মৃত আব্দুল মাজেদ শেখের ছেলে। আর আফছার মোল্লা মৃত আব্দুল আজিজ মোল্লার ছেলে। তারা দুজনই চেয়ারম্যানের প্রতিবেশী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ভোরে পার্শ্ববর্তী হালিম শেখের নিজ বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গাঁজার গাছসহ আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এদিন দিবাগত রাত ১২টার পর হঠাৎ আফছারের বাড়িতে এসে তাকে হালিমের সব দোষ নিজের কাঁধে নিয়ে স্বীকার করে থানায় জবানবন্দি দিতে বলেন আটক হালিম শেখের ভাই বাদশা, দুই ছেলে তারেক ও নয়ন এবং চেয়ারম্যানের আরেক সহযোগী জদু সরদার।
এজন্য তাকে এক হাজার টাকাও দেন তারা। পরের দিন সকালে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে তারা আফছারকে জোর করে চেয়ারম্যানের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখান থেকে চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীরা মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে থানায় নিয়ে যান। পুলিশের কাছে আফছার তাদের শেখানো কথা জবানবন্দি দিলে পুলিশ হালিমের সঙ্গে আফছারকেও কারাগারে প্রেরণ করে।
রাকিব হাসনাত/আরএআর