বরিশালে যুগের চেয়েও আধুনিক বিমানবন্দর করার পরিকল্পনা

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহাবুব আলী বলেছেন, বরিশাল বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিধন্য। আমরা বরিশাল বিমানবন্দরকে বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর বিমানবন্দর হিসেবে তৈরি করব। আমি বরিশালে এসেছি বিমানবন্দরের সামগ্রিক পরিস্থিতি পরিদর্শনে। এখানে সবচেয়ে অত্যাধুনিক টার্মিনাল স্থাপন করা হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরিশালের প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক।
শনিবার (১৯ মার্চ) সকালে বরিশাল বিমানবন্দর ও সংলগ্ন ভাঙন ঝুঁকিতে থাকা এলাকা পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক ও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা রুবিনা মিরা। সকালে তারা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে বরিশালে পৌঁছান।

বিমানবন্দরটির একটি অংশ ভাঙন ঝুঁকিতে আছে উল্লেখ করে বিমান প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিমানবন্দরের ভাঙনরোধে স্থায়ী পরিকল্পনা গ্রহন করা হবে। এছাড়া ভাঙন রোধের জন্য সাময়িক পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর অনেক স্বপ্ন ছিল এদেশের এভিয়েশন সেক্টর নিয়ে। বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর আপনারা দেখেছেন দেশের প্রত্যেকটি বিমানবন্দরে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। তেমনি যুগের চেয়েও আধুনিক বিমানবন্দর হবে বরিশাল বিমানবন্দর। আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিব বরিশাল বিমানবন্দর নির্মাণে।
মাহাবুব আলী বলেন, ইতোমধ্যে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করা হয়েছে। বরিশাল যেহেতু একটি বড় অবস্থানে রয়েছে, এজন্য বরিশাল বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক রূপ দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। প্রথানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা সবগুলো বিমানবন্দরে যেন ৭৭৭ বিমান অবতরণ করতে পারে সেই ব্যবস্থা করব। এছাড়া বরিশালে যেন ২৪ ঘণ্টা বিমান ওঠানামা করতে পারে সে ব্যবস্থা করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের এভিয়েশন সেক্টরে উন্নয়নের বিপ্লব ঘটেছে। বরিশাল বিমানবন্দরের রানওয়ে আরও সাড়ে ৭শ ফুট বাড়ানো, বিমান যেন কোনো প্রকার অসুবিধা ছাড়াই অবতরণ করতে পারে সেই কাজ খুব শিগগিরই শুরু হবে। আরও একটি অত্যাধুনিক নতুন টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, বিমানবন্দরের রানওয়ে ও বাবুগঞ্জের ক্ষুদ্রকাঠি গ্রাম, সুগন্ধা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষায় ৫০ কোটি টাকার প্রকল্পের প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০২৩ সালের মধ্যে ভাঙন সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।

তিনি বলেন, দেশের অন্যান্য বিমানবন্দরের উন্নয়ন হলেও বরিশাল বিমানবন্দর উন্নয়নে পিছিয়ে ছিল। বরিশালে এক সময় বিমান চালু হওয়ার পরও যাত্রীর অভাবে বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে চাঙা হয়েছে। এখন বরিশালে যেসব বিমান আসে সেগুলো যাত্রীপূর্ণ করেই আসে। ফলে এই বিমানবন্দরের উন্নয়নে সামগ্রিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিগত বছরগুলোতে আমরা দেখেছি বাবুগঞ্জের এই অংশটিকে ভাঙন প্রবণতা খুব বেশি। নদী ভাঙন রোধে একটি বৃহৎ প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এই মুহূর্তে আমরা চিন্তিত বিমানবন্দরের রানওয়েটিকে নিরাপদ রাখার বিষয়ে। আসন্ন বর্ষায় যেন সুগন্ধা নদীর ভাঙন রানওয়ে পর্যন্ত না যায়, সেই উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। আপনারা দেখেছেন, ইতোমধ্যে ভাঙন রোধে আমরা ৫শ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলেছি। এখন তা আরও ৬শ বাড়িয়ে দিয়েছি। এই ১১শ মিটার জিও ব্যাগ ফেলা হলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস ভাঙন কমে আসবে।
বিমান প্রতিমন্ত্রী, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য স্পিডবোটযোগে বাবুগঞ্জ উপজেলার ভাঙনকবলিত ক্ষুদ্রকাঠি গ্রামের বকুলতলা পয়েন্ট থেকে বিমানবন্দরের অংশ পর্যন্ত পরিদর্শন করেন এবং সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেন।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর