এসআই পরিচয়ে বিয়ে, পরে জানা গেল তিনি পান বিক্রেতা

পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) পরিচয় দিয়ে বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন উৎপল মন্ডল (৪০) নামে এক পান বিক্রেতা। রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের জিয়েলগাড়ীপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার (২৫ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নবাবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাদশা আলমগীর ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে তাকে বালিয়াকান্দি থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
উৎপল মন্ডল গোপালগঞ্জের মকছেদপুর থানার দিস্তাই গ্রামের নিরাপদ মন্ডলের ছেলে।
জানা গেছে, প্রতারণার শিকার ওই কলেজছাত্রী ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নে। ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর সঙ্গে উৎপল মন্ডলের মোবাইল ফোনে পরিচয় হয়। বেশ কিছু দিন কথা চলে তাদের। তারপর তারা জড়িয়ে পড়েন প্রেমের সম্পর্কে। দুই মাস আগে ফরিদপুর আদালতে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে করেন তারা।
প্রতারণার শিকার ওই কলেজছাত্রীর পরিবার জানায়, উৎপল নিজেকে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) পরিচয় দিতেন। প্রথম দিকে মেয়ের বাড়ির লোকজন ওই বিয়ে না মানলেও জামাই পুলিশের এসআই শুনে মেনে নেন। প্রায় দুই মাস ধরে শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত করেন উৎপল। এর মাঝে এসআই থেকে প্রমোশন হবে এমন কথা বলে দুই লাখ টাকাও হাতিয়ে নিয়েছেন শ্বশুরের কাছ থেকে। পরে পুলিশের পরিচয়পত্র দেখতে চায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন। সেখানে নানা প্রতারণার আশ্রয় নেন উৎপল। দুই দিন আগে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মনে সন্দেহ হয়।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে শ্বশুরবাড়িতে আসার পর তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে ভুয়া এসআই পরিচয় দেওয়ার কথা স্বীকার করেন তিনি। পরে শুক্রবার বিকেল ৫টায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে তাকে থানায় সোপর্দ করা হয়। তিনি আগেও বোয়ালমারীতে বিয়ে করেছেন।
বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন উৎপল মণ্ডল বলেন, কয়েক মাস আগে আমাদের ফোনে পরিচয় হয়। ও অনার্সে পড়ে, এ জন্য আমি এসআই পরিচয় দিয়েছিলাম। আমি বলতাম কিশোরগঞ্জের এসপি অফিসে চাকরি করি। তারপর আমাদের প্রেম হয়। দুই মাস আগে ফরিদপুর কোর্টে আমরা বিয়ে করি। মূলত আমি পানের ব্যবসা করি। আজকে শ্বশুরবাড়ি এলাকার লোকজন জানতে পারে আমি পানের ব্যবসা করি। এটি জানার পর সবাই মিলে আমাকে মারধর করে।
নবাবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাদশা আলমগীর বলেন, পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণা করায় স্থানীয় লোকজন উৎপলকে ধরে আমাকে খবর দেন। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
বালিয়াকান্দি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুজ্জামান বলেন, প্রতারণার শিকার পরিবারের লোকজন তাকে আটক করে থানায় সোপর্দ করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মীর সামসুজ্জামান/আরএআর