প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড পেলেন সেই মশিউর

নীলফামারী সদর উপজেলার রামগঞ্জ ইউনিয়নের বাহালিপাড়া মাস্টারপাড়ার মানসিক ভারসাম্যহীন মশিউর রহমান প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৬ মে) বিকেলে নীলফামারী জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক এমদাদুল হক প্রামাণিক ও সহকারী পরিচালক নুসরাত ফাতেমা তার হাতে ভাতার কার্ড তুলে দেন।
এর আগে বুধবার (২৬ মে) রাতে ‘চিকিৎসায় নিঃস্ব পরিবার, এখন শিকলে বন্দী মশিউর’ শিরোনামে মানসিক ভারসাম্যহীন মশিউর রহমানকে নিয়ে জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড পাওয়ার পর ঢাকা পোস্টের প্রতিবেদককে ধন্যবাদ জানিয়ে মশিউরের বাবা সালাহ উদ্দিন ওরফে টন্না মামুদ বলেন, ‘আইজ ১২-১৩ বছরেও কোনো অনুদান পাই নাই। চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েও কোনো লাভ হয় নাই। বাবা তোমার গুলার জন্য এই বার ভাতার কার্ড পাইনো। আল্লাহ তোমার ভালো করুক।’
সমাজসেবা অধিদপ্তরের রামনগর ও সোনারায় ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা কারিগরি অফিসার উম্মে হাবিবা ঢাকা পোস্টকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এই বিষয়টি কোনোভাবে আমাদের নজর এড়িয়ে গেছে। ধন্যবাদ বিষয়টি তুলে আনার জন্য। আপনাদের সংবাদ প্রকাশের পর আমরা একদিনের মধ্যে তার ভাতার ব্যবস্থা করেছি।
নীলফামারী জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক এমদাদুল হক প্রামাণিক বলেন, ঢাকা পোস্ট এমন মানবিক সংবাদ প্রকাশের কারণে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ঢাকা পোস্টের প্রতিনিধির মাধ্যমে মশিউরের বিষয়টি জানতে পেরে আমরা তার জন্য কাজ শুরু করি এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভাতার কার্ড ইস্যু করি।
প্রসঙ্গত, মশিউর রহমান নীলফামারী সদর উপজেলার রামগঞ্জ ইউনিয়নের বাহালিপাড়া মাস্টারপাড়ার সালেহ উদ্দিন ওরফে টন্না মামুদ ও ছেরাতন বেগমের একমাত্র ছেলে। প্রায় চার বছরের বেশি সময় ধরে শিকলবন্দী জীবন পার করছেন মানসিক ভারসাম্যহীন এই যুবক। তার চিকিৎসার ব্যয় মেটাতে গিয়ে সর্বস্ব হারিয়েছে পরিবার। বাবা-মায়ের ইচ্ছা ছিল পড়াশোনা করে অভাবের সংসারের হাল ধরবে ছেলে। কিন্তু সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন হঠাৎ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে মশিউর। শুরু হয় পাগলামি। মারধর করে বাবা-মাসহ পাড়া-প্রতিবেশীকে। হুট করে ভারসাম্যহীন অবস্থায় হারিয়ে যেত সে। এরপর দীর্ঘ ১০ বছরের বেশি সময় ধরে পরিবার সর্বস্ব দিয়ে চিকিৎসার পরও সুস্থ না হওয়ায় বাধ্য হয়ে চার বছর ধরে মশিউরকে শিকলবন্দী করে রেখেছে তার পরিবার।
শরিফুল ইসলাম/আরএআর