করোনাকালে অক্সিজেন সরবরাহ, অদম্য নারী পুরস্কার পেলেন আবিদা

মহামারি করোনা ভাইরাসের সময়ে সবার জীবন যখন থমকে দাঁড়ায়, মহামারির সবচেয়ে সংকটময় মুহূর্তে যখন অক্সিজেনের ঘাটতিতে মানুষ দিশাহারা, তখন নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েই অক্সিজেন সিলিন্ডার সংগ্রহ, পরিবহন ও রোগীদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার কাজ চালিয়ে যান খন্দকার আবিদা সুলতানা রিয়া। করোনা মহামারির কঠিন সময়ে অক্সিজেন সরবরাহ করে অসংখ্য মানুষের প্রাণ বাঁচানোর জন্য বিশেষ স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি। মানবিক সেবায় তার অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তাকে দেওয়া হয়েছে অদম্য নারী পুরস্কার।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে নীলফামারীর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বেগম রোকেয়া দিবসের অনুষ্ঠানে তার হাতে সম্মাননা তুলে দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান।
আবিদা সুলতানা নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার ধলাগাছ এলাকার খন্দকার আলমগীর হোসেনের মেয়ে। তিনি সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। বর্তমানে সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটিতে আইন বিভাগে অধ্যয়নরত আছেন।
আবিদা সুলতানার সমাজসেবামূলক কাজের শুরু ছোটবেলা থেকে সহপাঠীদের সহায়তা করে। শুধু অক্সিজেন সরবরাহই নয়, অসহায় ও নিম্নআয়ের মানুষের জন্য খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, ওষুধের ব্যবস্থা এবং জরুরি স্বাস্থ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কাজও করেছেন। তার এই সেবামূলক কাজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার জন্ম দেয় এবং অনুপ্রাণিত করে আরও অনেক তরুণকে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আসছেন। দরিদ্র পরিবারে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া, অসুস্থ রোগীদের ওষুধ সরবরাহ, শিক্ষা থেকে বঞ্চিত শিশুদের পড়াশোনায় সহায়তা করেন।
খন্দকার আবিদা সুলতানা রিয়া বলেন, আজকের এই স্বীকৃতি আমার জীবনের এক বিশাল মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। আমি কখনোই কোনো প্রত্যাশা নিয়ে কাজ করিনি, তবে ভালো কাজের স্বীকৃতি পেতে বরাবরই ভালো লাগে। আজকের এই সম্মাননা সমাজের প্রতি এবং আমার কাজের প্রতি আমার দায়িত্ববোধকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই সামনের দিকে এগিয়ে গিয়ে আমি সমাজের মানুষের জন্য এবং দেশের জন্য আরও অর্থপূর্ণ অবদান রাখার চেষ্টা করব।
আবিদার বাবা খন্দকার আলমগীর হোসেন বলেন, আমার মেয়ে ছিন্নমূল মানুষকে সহায়তা করে সেটি আমাদের জন্য ভালো লাগার। আমরা সবসময়ই তাকে সহায়তা করার চেষ্টা করি। তার প্রাপ্তিতে আমরা অনেক খুশি।
আবিদার শিক্ষক হাফিজুর রহমান বলেন, ছোটবেলা থেকে আবিদা মেধাবী শিক্ষার্থী। পড়ালেখার পাশাপাশি সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড অংশগ্রহণ করতো। সে তার মেধা দিয়ে সমাজের উন্নয়ন করে সেটি আমার জন্য গর্বের।
সৈয়দপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নূর নাহার শাহাজাদী বলেন, আমরা প্রতি বছর বেগম রোকেয়া দিবসে সমাজের বিভিন্ন কাজে অবদান রাখা নারীদের সম্মাননা দিয়ে থাকি। করোনাকালে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে জীবন রক্ষাসহ সমাজের নানা সহায়তা করার জন্য আবিদা সুলতানাকে অদম্য নারী পুরস্কার সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
আরএআর