সিলেটে সংঘর্ষের ঘটনায় ৩ মামলা

সিলেট নগরের চৌহাট্টায় অবৈধ মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে পরিবহন শ্রমিক ও সিসিকের কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় তিনটি মামলা হয়েছে। এতে ২৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩শ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করে সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আবু ফরহাদ বলেন, সিসিকের দায়ের করা মামলায় এজাহারনামীয় আসামি ১০ জন, পুলিশকে লাঞ্ছিত করা মামলায় ১৭ জন এবং অস্ত্র আইনে দায়ের করা মামলায় একজনকে আসামি করা হয়েছে।
সিলেট সিটি করপোরেশন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অস্ত্রসহ যুবক আটকের ঘটনায় একটি, দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা এবং সিলেট সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধরের ঘটনায় আরেকটি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলার মধ্যে একটি মামলার বাদী সিসিকের উপ-সহকারী প্রকৌশলী দেবপদ রায় এবং বাকি দুটি মামলার বাদী পুলিশ।
এদিকে, আগ্নেয়াস্ত্রসহ আটক সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক ফয়সল ওরফে ফাহাদকে (৩৮) অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে বুধবার দুপুরে সিলেট নগরের চৌহাট্টায় অবৈধভাবে গড়ে তোলা স্ট্যান্ড উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলা চালায় পরিবহন শ্রমিকরা। এরপরই শ্রমিকদের সঙ্গে সিসিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সংঘর্ষ বাঁধে। এই সময় পরিবহন শ্রমিকরা লাঠি-সোঠা নিয়ে সিসিক কর্মকর্তা কর্মচারীদের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় বেশ কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়ে। এতে কাউন্সিলরসহ উভয় পক্ষের অনন্ত ৮ জন আহত হয়েছেন।
এ সময় মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর দিকে বন্দুক তাক করে তেড়ে আসা ফয়সল আহমদ ওরফে ফাহাদ নামের এক যুবককে আটক করে পুলিশ। তার কাছ থেকে একনলা একটি বন্দুক ও ৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আটক ফাহাদ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক সম্পাদক।
এদিকে, আগামী সোমবার থেকে সিলেটে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে পরিবহন শ্রমিকরা। গাড়ি ভাঙচুর ও হামলার প্রতিবাদের তারা এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট জেলা বাস মিনিবাস মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন (১৪১৮) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ ঘোষণা দেন সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নবনির্বাচিত সভাপতি ময়নুল ইসলাম।
এর আগে সন্ধ্যায় নগর ভবনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় অবৈধ স্ট্যান্ড অপসারণে সম্মিলিতভাবে কাজ করার অঙ্গীকার করেন নাগরিক প্রতিনিধিরা।
সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুল আলিম শাহ জানান, চৌহাট্টা-আম্বরখানা সড়ক সম্প্রসারণ ও ফুটপাত নির্মাণের কাজ করছে সিলেট সিটি করপোরেশন। চৌহাট্টা এলাকায় সড়কের ফুটপাত দখল করে অবৈধ স্ট্যান্ড তৈরি করেছে কার ও মাইক্রোবাস শ্রমিকরা। সিটি করপোরেশন ও মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে একাধিকার এই স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করা হলেও ফের ফুটপাত দখল করে নেন শ্রমিকরা।
বুধবার সকালে সিটি করপোরেশন অবৈধ স্ট্যান্ড সরাতে গেলে উত্তেজিত মাইক্রোবাস শ্রমিকরা সিসিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। পরে পুলিশ গিয়ে ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তুহিন আহমদ/এসপি