দ্বিতীয় দফা বন্যায় সুনামগঞ্জে লাখো মানুষ পানিবন্দি
সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) ভোরে সুনামগঞ্জ শহরের সুরমা নদীর তীরবর্তী সব এলাকায় ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে পানি ঢুকেছে। হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি হয়েছে শহরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক এলাকাগুলোতে। বন্ধ হয়ে গেছে দোকানপাট।
বিকেল ৪টায় সুনামগঞ্জ পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার এবং ছাতকে ২১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় নদীর পানি কূল উপচে লোকালয়ে ঢুকছে।
সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, শান্তিগঞ্জ, দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলার বেশিরভাগ এলাকা ডুবে গেছে। এই উপজেলার লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার নবীনগর, ষোলঘর, উকিলপাড়া, জেলরোড, জগন্নাথবাড়ি, মধ্যবাজার ও পশ্চিমবাজার এলাকার বাড়িঘর-দোকানপাটে হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি জমেছে। শহরের পূর্ব-পশ্চিম নতুনপাড়া, বড়পাড়া, তেঘরিয়া, বাঁধনপাড়া, শান্তিবাগ, আরপিননগর, কালীপুরসহ বর্ধিত এলাকায় হাজারো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শহরের সবচেয়ে উঁচু এলাকা আলফাত স্কয়ারেও ছুঁই ছুঁই করছে বন্যার পানি।
গতকাল বুধবার (১৫ জুন) থেকে দ্বিতীয় দফা বন্যায় ভোগান্তিতে পড়েছে সুনামগঞ্জের মানুষ। আবারও বিশ্বম্ভরপুর-তাহিরপুর, ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এসব উপজেলার রাস্তায় রাস্তায় নৌযান চলছে। পানি বাড়ার পাশাপাশি বন্যাদুর্গত এলাকার গ্রামগুলোতে আফালের (তীব্র বাতাসে সৃষ্ট পানির অস্বাভাবিক ঢেউ) তাণ্ডবে ঘরবাড়ির ক্ষতি হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম জানান, বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।
বৃষ্টিপাত আরও কয়েকদিন থাকার তথ্য জানিয়ে সিলেট আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ সাইদুর রহমান চৌধুরী বলেন, চলতি মাসে ৮১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হবে। এই কয়েক দিনে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৯ জুন পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকতে পারে।
এক মাসের মাথায় দ্বিতীয় দফার বন্যায় অনেকটা নাকাল সুনামগঞ্জের মানুষ। অবশ্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, যেসব বিদ্যালয়ে পানি উঠেছে সেগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। ইতোমধ্যে বন্যার্তদের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেগুলো বিতরণ করা হবে।
আরএআর/জেএস
