সিরাজগঞ্জে কমছে যমুনার পানি, ঘরে ফিরতে পারছে না মানুষ
গত তিন দিন হলো সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি কমতে থাকায় জেলার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এখনো বন্যাকবলিত এলাকার বসতবাড়ি থেকে পানি না নামায় বাড়ি ফিরতে পারছেন না বানভাসিরা। ফলে কমেনি ভোগান্তি।
গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ হার্ডপয়েন্ট এলাকায় ১৫ সেন্টিমিটার ও কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার পানি কমেছে। পানি কমলেও হার্ডপয়েন্ট এলাকায় এখনো বিপৎসীমার ৩০ সেমি ও কাজিপুর পয়েন্টে ২৯ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে যমুনার পানি।
শুক্রবার (২৪ জুন) সকালে বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপসহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন ও সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক হাসানুর রহমান।
চলতি বন্যায় জেলার পাঁচটি উপজেলার ৩৮টি ইউনিয়নের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া এরই মধ্যে ৯১০৬ হেক্টর জমির রোপা আমন, পাট, তীল, মরিচ, বাদাম, বোনা আমন, শাকসবজি, বীজতলাসহ উঠতি ফসল পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়েছে। এতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। অন্যদিকে জেলার নদীতীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চল এলাকার ৮৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে ও শ্রেণিকক্ষে পানি ওঠায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
উপসহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন জানান, যমুনার পানি দ্রুত কমছে। আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে পানি বিপৎসীমার নিচে চলে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আখতারুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে জানান, জেলার পাঁচটি উপজেলার ৩৮টি ইউনিয়নের ৮ হাজার ৪০০ পরিবারের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বন্যাকবলিতদের মাঝে ১৪০ মেট্রিক টন চাল, ৬ লাখ টাকা ও ৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার নিজ নিজ উপজেলায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেগুলো দ্রুত বিতরণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া মজুত রয়েছে ৭৭১ মেট্রিক টন চাল ও ১৪ লাখ টাকা। সেই সঙ্গে বিশেষ বরাদ্দের জন্য ১০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও ১ হাজার বান্ডিল ডেউটিন বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, চলতি বন্যায় জেলায় প্রায় ৫৬৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ফলে বন্যার্তদের জন্য ১৮৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পানিবন্দি মানুষদের চিকিৎসার জন্য ২৩টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। সার্বক্ষণিক কাজ করছে এসব টিম।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম জানান, যমুনায় পানি কমতে শুরু করেছে। অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানিও খুব দ্রুত নিম্নাঞ্চল থেকে নেমে যাবে।
শুভ কুমার ঘোষ/এনএ
