টাঙ্গাইল মহাসড়কে মৌসুমি হকারদের জমজমাট ব্যবসা

টাঙ্গাইলে মহাসড়কে যানজটে আটকেপড়া যাত্রীদের কাছে পানিসহ বিভিন্ন খাবার বিক্রি করে মৌসুমি হকাররা লাভবান হচ্ছেন। একবেলা বিক্রি করেই দুই থেকে তিন হাজার টাকা আয় করছেন তারা। এদের মধ্যে শিক্ষার্থী ছাড়াও স্থানীয় অনেকেই মহাসড়কে হকারি করছেন। সরেজমিনে বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব গোলচত্বর এলাকায় এমন চিত্র দেখা গেছে।
টাঙ্গাইলে একটি সরকারি কলেজে পড়াশোনা করছে হাবিবুল্লাহ। বাড়ি ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব মহাসড়কের পাশে। অন্যদের সঙ্গে হাবিবুল্লাহ গেল দুইদিন ধরে মহাসড়কে আটকে থাকা লোকজনের কাছে পানি ও জুস বিক্রি করছেন। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পানি ও জুস বিক্রি করে আয় করেছেন ৭ হাজার টাকা।
বল্লভবাড়ি এলাকার শাহআলমও একজন মৌসুমি হকার। তিনি পেয়ারা ও আমড়া বিক্রি করছেন। শনিবার সকাল থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত চার হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন তিনি। বিক্রির অর্ধেকই তার লাভ হয়েছে বলে জানান। আরেকজন বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব রেলস্টেশন এলাকার মুন্নাফ। তিনি বিক্রি করছেন মুরগি দিয়ে ভাত ও ডিম খিচুরি। এসব বিক্রি করে তার দিনে আয় হয় ১০-১২ হাজার টাকা।
হাবিবুল্লাহ বলেন, বাবা সরকারি চাকরি করেন। আমি পড়াশোনা করছি সরকারি কলেজে। বাড়িতে বসেই থাকি। বাড়ির পাশেই মহাসড়কে হাজার হাজার পরিবহন আটকে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তাই অন্যদের মতো আমিও পানি ও জুস নিয়ে বের হয়ে পড়ি। ভালো বিক্রি হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে মানুষ পানি কিনতে বাধ্য হচ্ছে। তিন দিন ধরে বিক্রি করছি। গোলচত্বর এলাকায় স্থানীয় অনেক চাকরিজীবী মানুষজনও এই সময় হকারি করে কিছু টাকা আয় করছে।
হকার শাহ আলম বলেন, সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পেয়ারা ও আমড়া প্যাকেট বানিয়ে ১০ টাকা করে বিক্রি করছি। এতে চার হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। এই বাড়তি টাকা দিয়ে পরিবার নিয়ে ভালোভাবে ঈদ করতে পারব। গোলচত্বর এলাকায় শতাধিক মৌসুমি হকার রয়েছে। তারা এভাবেই বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করছে আটকাপড়া যাত্রীদের কাছে।
হকাররা জানায়, ঢাকা থেকে মানুষ রাতে রওনা দিয়ে আর কিছু খেতে পারেন না। তাই দুপুর হলেই তাদের ব্যাপক খিদে লাগে। এছাড়া তীব্র রোদ ও গরমে মহাসড়কে নাভিশ্বাস অবস্থা। এতে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষজন যা পাচ্ছে তাই কিনে খাচ্ছে।
প্রতি বছরই ঈদকে কেন্দ্র করে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যানজট লেগে থাকে। এতে যানজটে পরিবহন ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকায় যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মৌসুমী হকারের সংখ্যা বেড়ে যায়। স্থানীয় ছোট-বড় ও চাকরিজীবীরা মহাসড়কে হকারি শুরু করেন। এতে দুই তিনদিনে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করে ভালো টাকা আয় করেন তারা।
এমএএস