রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট, অফিস শেষে হেঁটে বাসায় যাচ্ছেন অনেকেই

প্রস্তাবিত ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির’ অধ্যাদেশ জারির দাবিতে শিক্ষা ভবনের সামনে রাস্তা বন্ধ করে প্রায় ৫ ঘণ্টা ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন রাজধানীর সাত সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। এতে কাকরাইল, পল্টন, গুলিস্তান, শাহবাগ ও নিউ মার্কেট এলাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। বাধ্য হয়ে অফিস শেষে অনেককেই পায়ে হেঁটে বাসায় ফিরতে দেখা গেছে।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ ও তিতুমীর কলেজের ৪০০-৫০০ জন শিক্ষার্থীর একটি দল শিক্ষা ভবনের সামনে বসে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। পরে অন্য কলেজগুলো থেকেও দলে দলে স্লোগান দিয়ে তাদের সঙ্গে যু্ক্ত হয় আরো কয়েকশ শিক্ষার্থী। এতে শিক্ষা ভবনের চারপাশের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়।
সরেজমিন দেখা গেছে, অফিস শেষে অনেকেই ব্যাগ হাতে পাঁয়ে হেঁটে বাসায় ফিরছেন। কেউ কেউ ক্ষোভে ফুঁসছেন ও সরকারকেই দুষছেন। সরকারের দুর্বল প্রশাসন নীতির কারণে এখন যে যেভাবে পারছে, আন্দোলন করছে বলে তাদের অভিযোগ। কেউ আবার স্ত্রী-বাচ্চা কিংবা বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাসে অপেক্ষা করছে।
এদিকে, দুপুরে অবস্থান কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা কোনো এসি রুমে আলোচনায় বসবো না। সচিবালয়েও যাব না। আমাদের দাবি একটাই, তা হলো দ্রুত সময়ের মধ্যে অধ্যাদেশ জারি করতে হবে। দ্রুত সমযয়ে অধ্যাদেশ জারি না করলে আমরা কঠোর থেকে কঠোরতম আন্দোলন গড়ে তুলবো।
এসময় তাদের 'উই ওয়ান্ট, উই ওয়ান্ট, অর্ডিন্যান্স, অর্ডিন্যান্স', 'সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে, আগুন জ্বালো', 'বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর', 'তালবাহানা বন্ধ করো, অধ্যাদেশ জারি করো'-সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এর আগে দুপুরে শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেত মোড়ে জড়ো হন। পরে একযোগে স্লোগান দিতে দিতে তারা শিক্ষা ভবনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষা ভবনের নিরাপত্তা জোরদার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শিক্ষা ভবনের মূল ফটকের প্রবেশদ্বারে দেওয়া হয় ব্যারিকেড।
শিক্ষার্থীদের দাবি, দ্রুত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ জারি করতে হবে। প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির খসড়া আইন শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রকাশ করলেও এখনো চূড়ান্ত অধ্যাদেশের কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। এতে পরিচয় সংকট, অ্যাকাডেমিক অনিশ্চয়তা এবং ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন প্রায় দেড় লক্ষাধিক শিক্ষার্থী।
সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর আন্দোলনের অর্গানাইজিং উইং থেকে শনিবার (৬ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত আইনটির ওপর অনলাইনে মতামত নেওয়া হলেও তিন দফা বৈঠকের পরও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। ফলে শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ আরও বেড়েছে।
এমএমএইচ/জেডএস