লোকালয়ে হনুমান, বিরক্ত না করার আহ্বান
প্রায় দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে নীলফামারী জেলা শহরের গাছবাড়ি, কৃষি ফার্ম, মিলনপল্লী, হাড়োয়া, পুরাতন রেলস্টেশন, নীলফামারী সরকারি কলেজ এলাকার একেবারে জনসমাগমে ঘোরাফেরা করছে একটি হনুমান। বনবিভাগের কর্মকতাদের ধারণা, টাঙ্গাইল থেকে ট্রাক যোগে এদিকে এসেছে হনুমানটি। এটিকে বিরক্ত না করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
শহরের গাছবাড়ি এলাকার বাসিন্দা নুর আলম বলেন, কয়েক দিন আগে আমার এলাকায় হনুমানটির দেখা মেলে। মোবাইল ফোনের টাওয়ারে অবস্থান নেয় হনুমানটি। আমরা অবশ্য ভাত, কলা খেতে দিয়েছিলাম। সেগুলো খেয়ে হনুমানটি আবারও টাওয়ারে অবস্থান নেয়। পরে দেখি সে অন্যত্র চলে গেছে।
সৌরভ রায় নামে এক ব্যক্তি বলেন, মঙ্গলবার আমাদের বাসার পেছনে পেয়ারা গাছে প্রায় এক ঘণ্টা ছিল হনুমানটি। অনেক পেয়ারা খাওয়ার পর সেখান থেকে অন্য জায়গায় চলে যায়। এভাবেই এটি ঘুরে বেড়াচ্ছে।
মিলনপল্লী এলাকার বাসিন্দা আব্দুল খালেক বলেন, কয়েক দিন আগে আমাদের পাড়ায় দেখা গেছিল হনুমানটি। তবে মানুষের ভিড় বাড়তে শুরু করায় আমাদের এলাকা থেকে চলে যায়। হনুমানটিকে কারও ক্ষতি করতে দেখিনি। তবে কুকুর দেখলে উচ্চস্বরে ডাকাডাকি শুরু করে।
নীলফামারী সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুরুল করিম বলেন, সেদিন কলেজের দেয়ালের ওপর বসে থাকতে দেখা গেছে হনুমানটিকে। এটিকে উদ্ধার না করলে কেউ মেরে ফেলতে পারে। হনুমানটি স্বাভাবিকভাবে খাবার গ্রহণ করতে পারছে না। যেহেতু এটি আমাদের ক্ষতি করছে না, সে হিসেবে সংরক্ষণ করার সুযোগ থাকলে কর্তৃপক্ষ সেটি করতে পারে।
সেতুবন্ধন যুবসমাজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, হনুমানটি সম্ভবত দলছুট। এটি খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে এসেছে। বাংলাদেশে বিপন্ন তালিকায় স্থান পাওয়া প্রাণীদের একটি কালোমুখো হনুমান। এরা দলবদ্ধ হয়ে বসবাস করা বৃক্ষচারী শান্তিপ্রিয় প্রাণী। এটিকে আঘাত কিংবা বিরক্ত না করার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।
জানতে চাইলে রংপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মতলুবুর রহমান বলেন, হনুমানটি টাঙ্গাইলের মধুপুর থেকে ওই এলাকায় গেছে। কারণ আনারস ও কলা ট্রাকে করে নিয়ে আসা হয়। কোনো ট্রাকে বসে এসেছে হনুমানটি। সে ক্ষতি করবে না। কিছুদিন পর আবার সে তার এলাকায় ফিরে যাবে। এক্ষেত্রে তাকে বিরক্ত করা যাবে না। আমরা হনুমানটির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছি।
শরিফুল ইসলাম/আরএআর