বন্ধ হচ্ছে না ট্রান্সফরমার চুরি, চোর ধরতে লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে পল্লী বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার চুরি বন্ধই হচ্ছে না। এতে আতঙ্কে আছেন কৃষকরা। এ ঘটনায় প্রশাসনও রয়েছেন বেকায়দায়। তাই চুরি বন্ধে চোর ধরার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছে উপজেলা পরিষদ।
জানা গেছে, শেরপুর জেলার পল্লী বিদ্যুতের অধীনে সেচ দেওয়ার জন্য মোটর বসাতে নিজ অর্থায়নে ট্রান্সফরমার লাগাতে হয় গ্রাহকদের। এতে প্রতি কৃষকের সব মিলে ব্যয় হয় প্রায় এক লাখ টাকা। কিন্তু এক বছর ধরে নালিতাবাড়ী উপজেলায় ট্রান্সফরমার আশঙ্কাজনকভাবে চুরি হচ্ছে। গত এক মাসে চুরি হয়েছে ছয়টি আর এক বছরে ২৩টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। কোনো ট্রান্সফরমার চুরি হলে কৃষকদেরই আবার তা কিনতে হয়। এতে বিপাকে আছেন এখানকার কৃষকরা। তাইতো কেউ কেউ রাত জেগে ট্রান্সফরমার পাহারা দিচ্ছেন।
এদিকে কৃষকরা প্রশাসনের কাছে ঘুরেও তাদের চুরি যাওয়া ট্রান্সফরমার উদ্ধার করতে পারছেন না। গ্রেপ্তার হচ্ছে না কোনো চোর। এতে বিপাকে আছে পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারাও। তাই কৃষকদের অসহায় অবস্থা দেখে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদ। কেউ ট্রান্সফরমার চোর ধরতে পারলে তাকে দেওয়া হবে এক লাখ টাকা পুরস্কার।
কৃষক এমদাদুল হক বলেন, আমরা খুব অসহায় অবস্থার মধ্যে আছি। আমাগোর ট্রান্সফরমার চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এর ওপর এলাকায় বিদ্যুৎও থাকছে না। এহন ঠিকমতো বৃষ্টি হয় না। সেচ দেওন নাগতাছে। কিভাবে জমিতে পানি দিমু। আগামী ইরি-বোরো মওসুমে কীভাবে আবাদ করব? আমরা এহন রাত জেগে ট্রান্সফরমার পাহারা দেই।
শেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মো. আলী হোসেন বলেন, আমরা ট্রান্সফরমার চুরি বন্ধে প্রশাসনকে সম্পৃক্ত করে সচেতনতামূলক সভা করছি। থানায় জিডি করেছি। কিন্তু এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আশা করি চুরি বন্ধ হবে।
নালিতাবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোকছেদুর রহমান লেবু বলেন, কৃষকরা অসহায়ের মতো এসে আমাদের কাছে ট্রান্সফরমার চুরি বন্ধের জন্য আকুতি জানিয়েছে। একটা ট্রান্সফরমার লাগাতে এক-দেড় লাখ টাকা খরচ হয়। ট্রান্সফরমার চুরি গেলে এর দায়ও কৃষকদেরই নিতে হয়। পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ নেয় না। তাই চুরি বন্ধে আমরা উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে চোর ধরতে পারলে এক লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছি। আশা করি এতে মানুষও সচেতন হবে, চুরিও বন্ধ হবে।
এসপি