মানবপাচার মামলায় ৪ জনের যাবজ্জীবন

নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ৪ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে, আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক আবদুস ছালাম খান এ রায় ঘোষণা করেন। ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রুবেল খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন শিউলী বেগম, হাসিনা (পলাতক), আবদুর রব ওরফে রাহুল (পলাতক) ও আমিন। এ মামলায় আজগর আলী গাজী ও রেজাউল সরকারকে খালাস প্রদান করা হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ভিকটিম তার বাবাকে নিয়ে গবরচাকা এলাকার হাবির বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন। অভাবের সংসার হওয়ায় স্থানীয় একটি বিউটি পার্লারে কাজ করতেন ভিকটিম। আর এ সুযোগ কাজে লগিয়ে মামলার এজাহার নামীয় আসামি লাবনী ২০১১ সালের ২১ নভেম্বর তাকে গার্মেন্টেসে কাজ দেওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়।
এর কিছুদিন পর আসামি শিউলী ও লাবনী বাড়ি ফিরে আসেন। ভিকটিমের বাবাকে তারা জানান, তার মেয়ে ঢাকায় একটি গার্মেন্টেসে চকরি করছে। অনেক টাকা বেতন পায়। অল্প সময়ের মধ্যে বাড়ি ফিরে আসবে। এ সময় ভিকটিমের বাবার হাতে ১ হাজার টাকা ধরিয়ে দেন তারা।
মেয়ে ফিরে না আসায় বাবা আসামিদের জিজ্ঞাসা করেন। কিন্তু তাদের কথায় সন্দেহ বাড়ে বাবার। পরবর্তীতে কয়েকজনকে নিয়ে আসামিদের বাড়িতে গেলে তারা স্বীকার করে যে তাকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ঢাকায় না নিয়ে ভারতে বিক্রি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সোনাডাঙ্গা থানায় ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন, যার নং ১০।
আদালত সূত্রে আরও জানা গেছে, ঘটনার দিন শিউলী বেগম ভিকটিমকে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে আসামি আমিনের সহায়তায় বোম্বে নিয়ে যায়। সেখানে নেওয়ার পর ওই দুই আসামি হাসিনার হেফাজতে রাখেন। পরবর্তীতে একটি বাসা ভাড়া করে শিউলী ও ভিকটিম একই স্থানে অবস্থান করেন।
পরে ওই তিনজন আসামি যোগসাজশে তাকে আবদুর রব ওরফে রাহুলের কাছে বিক্রি করে দেন। পরে হাসিনা ভারত থেকে দেশে ফিরে আসেন। সেখানে তাকে জোরপূর্বক দেহ ব্যবসায় নিয়োজিত করে। পরে পুলিশের সহায়তায় ভিকটিমকে ভারতের বোম্বে থেকে উদ্ধার করা হয়।
মোহাম্মদ মিলন/আরআই