নদীতে জিও ব্যাগ ফেলেও ঠেকানো যাচ্ছে না ভাঙন

Dhaka Post Desk

জেলা প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ

১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৯:০০ এএম


অডিও শুনুন

গোপালগঞ্জের সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের ইছখালী গ্রামে মধুমতি নদীতে জিও ব্যাগ ফেলেও ঠেকানো যাচ্ছে না তীব্র ভাঙন। চোখের পলকেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে আবাদি জমি ও বসতভিটা। ফলে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের ইছাখালী গ্রামের মধুমতী নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ইতোমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে কয়েক হাজার হেক্টর আবাদি জমি, বসতভিটা, রাস্তা-ঘাট, গাছপালাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। নিঃস্ব হয়ে পড়েছে নদীপাড়ের কয়েকশ পরিবার। দুই দিনে ১৫টি বসতবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে নদীগর্ভে। খোলা আকাশের নিচে ঠাঁই নিয়েছে এসব পরিবার। কেউবা ভাঙন আতঙ্কে ছাড়ছে চিরচেনা বসতভিটা। হুমকির মুখে রয়েছে শত শত একর ফসলি জমি ও বসতভিটা।

এদিকে কয়েক দিন ধরে ভাঙনরোধে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলেও ঠেকানো যাইনি নদীভাঙন। নদীর ভাঙন থেকে বাঁচতে স্থায়ী সমাধানের দাবি জানিয়েছে নদীপাড়ের বাসিন্দারা। তারা বলছে, জিও ব্যাগ নয়, নদীভাঙন ঠেকাতে প্রয়োজন সিসি ব্লক।

Dhaka post
 
ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত আসমা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বাড়িটা নদী ভাইঙ্গে নিয়ে গেছে। পাঁচটা মেহগুনি গাছ ছিল, তাও নদী নিয়ে গেছে। ছেলে-মেয়ে নিয়ে পাশের বাড়ি উঠছি। আমার আর্থিক অবস্থা ভালো না। আমি নতুন কইরে কীভাবে একটা বাড়ি করব। আমার তো জমি-জমাও নাই। আমি এখন ছেলে-মেয়ে নিয়ে কই থাকব? 

নদীপাড়ের বাসিন্দা ফিরোজ মোল্লা ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত দুই দিনে প্রায় ১৫টি বসতবাড়ি নদী নিয়ে গেছে। আমার বাড়িটা ১০ হাত দূরে আছে। আমার এই ভিটাটা ছাড়া কোনো জায়গা নাই। এই বাড়িটা যদি ভাইঙ্গে যায়, ছেলে-মেয়ে নিয়ে পথে বসা ছাড়া উপায় নেই। সরকারের কাছে দাবি, আমাদের একটা স্থায়ী সমাধান দরকার। 

অশীতিপর জাহানারা খাতুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার কোনো ছেলে-মেয়ে নেই। পরের জমিতে ঘর বানায় থাকতাম, তাও নদীতে নিয়ে গেছে। আমার আর কিছু নাই। আমি এখন কই থাকব জানি না।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়জুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ওইখানে মাটির যে বেয়ারিং ক্যাপাসিটি সেটা উত্তরবঙ্গের মতো। তাই নদীভাঙনের ধরনটাও অন্য রকম। আমরা ভাঙন রোধে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করা হচ্ছে। স্থায়ী সমাধানের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি।

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, আমরা নদীভাঙন কবলিত এলাকায় পরিদর্শনে গিয়েছিলাম।আমাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের যে সমস্ত সহযোগিতা রয়েছে তার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে ও ঘরবাড়িগুলো মেরামতের জন্য সমস্ত উদ্যোগ হাতে নিয়েছি। আমরা চেষ্টা করছি, ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধানের জন্য। ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। 

এসপি

Link copied