দুই বৌদি-ভাতিজির মরদেহ সৎকার করে জয়া-জুঁথির অপেক্ষায় গোপাল
![দুই বৌদি-ভাতিজির মরদেহ সৎকার করে জয়া-জুঁথির অপেক্ষায় গোপাল](https://cdn.dhakapost.com/media/imgAll/BG/2022September/gopal-20220927183048.jpg)
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া ফুটকিবাড়ি শিকারপুর এলাকার বাসিন্দা গোপাল চন্দ্র। গত রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার মাড়েয়া আউলিয়া ঘাটে করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় তার দুই ভাইয়ের স্ত্রী ও তিন ভাতিজিকে হারিয়েছেন।
ইতোমধ্যে বড় ভাই হেমন্তের স্ত্রী কবিতা রানী (৩৫), সেজো ভাই বাশু দেবের স্ত্রী রুপালী রানী (৩০) ও ভাতিজি শ্যামলীর মরদেহ খুঁজে পেয়ে সৎকার করেছেন। এখন তিন বছরের ভাতিজি জয়া ও চার বছরের ভাতিজি জুঁথির খোঁজে করতোয়ার পাড়ে ছুটে এসেছেন গোপাল। তবে এখনো তাদের খোঁজ পাননি। একসঙ্গে পরিবারের পাঁচ সদস্যকে হারিয়ে দিশেহারা গোপালের পরিবার।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে করতোয়ার তীরে গোপাল চন্দ্রের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।
গোপাল বলেন, সেদিন বৌদিরা আর বাচ্চাগুলা খুব আনন্দে বাড়ি থেকে বের হইছিল। কে জানে এমনটা হবে। দুই দিন দুই রাত অপেক্ষা করেও এখনো ভাতিজি দুইটার লাশ খুঁজে পাইনি। আজকের দিনটিও চলে যাচ্ছে। বাড়ির লোকজনের অবস্থা বেশি ভালো না। ভাই বার বার বেহুঁশ হয়ে যাচ্ছেন। ভাই তো এখানে আসতেও পারে না। তাই আমাকেই থাকতে হবে, শেষ পর্যন্ত থাকব। যেভাবে হোক ভাতিজি দুইটার লাশ খুঁজে দিন। দুই বৌদি আর এক ভাতিজির মরদেহ চিতায় দিয়ে এসেছি।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের করতোয়া নদীর অপরপাড়ে বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া পূজা উপলক্ষে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ধর্মসভার আয়োজন করা হয়। রোববার দুপুরের দিকে মূলত ওই ধর্মসভায় যোগ দিতে সনাতন ধর্মালম্বীরা নৌকা যোগে নদী পার হচ্ছিলেন। তবে ৫০ থেকে ৬০ জনের ধারণ ক্ষমতার নৌকাটিতে দেড় শতাধিক যাত্রী ছিল। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে নদীর মাঝপথে নৌকাটি ডুবে যায়। কয়েকজন সাঁতরে তীরে আসতে পারলেও অধিকাংশই পানিতে ডুবে যায়।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত (সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টা) ৬৮ জনের মরদেহ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপঙ্কর রায় ঢাকা পোস্টকে বলেন, যেহেতু নৌকায় যাত্রীর সংখ্যা নিশ্চিত না, তাই আজও আমাদের উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে। আর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক অনুদান ও চিকিৎসা খরচের ব্যবস্থা অব্যাহত রয়েছে।
আরএআর