স্বজনদের টানে পাকিস্তান থেকে দেশে ফিরলেন একলিমা

Dhaka Post Desk

জেলা প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা

১০ নভেম্বর ২০২২, ০৫:১১ পিএম


অডিও শুনুন

দীর্ঘ ৪০ বছর পরে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে পরিবারের কাছে ফিরলেন হারিয়ে যাওয়া একলিমা বেগম (৬৫)। বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) বেলা ১২টায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান তিনি। পরে দুপুর ৩টায় সাতক্ষীরার তালা গঙ্গারামপুর গ্রামে পৌঁছান। পাকিস্তানে একলিমার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। সেখান থেকে তার সঙ্গে এসেছেন দ্বিতীয় পক্ষের বড় ছেলে আশরাফ। 

একলিমা বেগমকে কাছে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েছেন তার স্বজনরা। এলাকাবাসী তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। ফিতা কেটে গ্রামের বাড়িতে প্রবেশ করেন তিনি ও তার ছেলে।

dhakapost

পরিবার সূত্রে জানা যায়, একলিমা বেগম সাতক্ষীরার তালা উপজেলার গঙ্গারামপুর গ্রামের মৃত ইসমাইল শেখের মেয়ে ও তিন সন্তানের জননী। দেশে থাকাকালীন স্বামীর মৃত্যুর পর মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি। ১৯৮২ সালে হারিয়ে যান একলিমা বেগম। পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান পায়নি তার। অবশেষে চার মাস আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার সন্ধান মেলে। 

জানা যায়, দীর্ঘ ৪০ বছর পর পাকিস্তানের শিয়ালকোটের দিলওয়ালীতে আছেন তিনি। তবে কীভাবে সেখানে পৌঁছালেন কিছুই মনে নেই তার। শুধু মনে আছে, তার বাবা-মা, ভাই ও তালার গঙ্গারামপুর গ্রামের নামটি। 

dhakapost

একলিমা বেগমের বড় ভাই মৃত মকবুল শেখের ছেলে জাকারিয়া শেখ বলেন, কিছু দিন আগে ফেসবুকের মাধ্যমে ফুফু একলিমার খোঁজ পাই। তারপর থেকে তার সঙ্গে বাড়ির সবার নিয়মিত কথা হয়। তিনি আমাদের এখানে আসার প্রবল আগ্রহ প্রকাশ করেন। এজন্য তাদের কাছে ইনভাইটেশন লেটার পাঠানো হয়। পরে পাকিস্তানে থাকা তার ছেলেদের সহযোগিতায় ভিসা প্রসেসিং সম্পূর্ণ হয়।

বৃহস্পতিবার পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ ফ্লাইট যোগে তিনি ঢাকায় আসেন। এপর দুপুর ৩টার দিকে গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছান। দীর্ঘ ৪০ বছর পর তাকে কাছে পেয়ে স্বজন ও এলাকাবাসী আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েছে। 

তিনি বলেন, আমরা তাকে ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। আগামী চার মাসের ভিসা নিয়ে ফুফু বাংলাদেশে এসেছেন। কতদিন গ্রামে থাকবে সেটা ঠিক এই মুহূর্তে বলা সম্ভব হচ্ছে না। তাকে কাছে পেয়ে আমরা সত্যিই আনন্দিত। 

একলিমার প্রথম পক্ষের ছেলে হেকমত আলী জানান, দীর্ঘ ৪০ বছর পর মাকে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েছি। মাকে জীবনে আর কখনো ফিরে পাবো এই আশা ছিল না। তবে মা সবাইকে চিনতে পারছে না। 

সোহাগ হোসেন/আরকে  

Link copied