কোকোডাস্ট পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করে কৃষকের বাজিমাত

Dhaka Post Desk

আকতারুজ্জামান, মেহেরপুর

২০ নভেম্বর ২০২২, ১২:৫৩ পিএম


কোকোডাস্ট পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করে কৃষকের বাজিমাত

মেহেরপুরে মাটির স্পর্শ ছাড়াই কোকোডাস্ট পদ্ধতিতে উৎপাদিত হচ্ছে শাক-সবজি, ফল-ফুলসহ বিভিন্ন ফসলের চারা। এ পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করে জেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় সাড়া ফেলেছেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহারবাটি গ্রামের কৃষক জিয়াউর রহমান। 

জানা গেছে, মেহেরপুর জেলায় প্রথমবারের মতো আধুনিক পদ্ধতিতে মাটির ব্যবহার ছাড়াই প্লাস্টিকের ট্রের মধ্যে কোকোডাস্ট ও জৈবসার ব্যবহার করে সবজিসহ ফল-ফুলের বীজ বপন করে চারা উৎপাদন শুরু হয়েছে। 

দেখা গেছে, সারি সারি প্লাস্টিকের ট্রে সাজানো। সেই ট্রেতে সারিবদ্ধভাবে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির শাক-সবজির চারা। তবে অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে, এসব চারার সঙ্গে মাটির কোনো সম্পৃক্ততা নেই। নারকেলের ছোবড়ার টুকরার (কোকোডাস্ট) মধ্যে বীজ বপন করা হচ্ছে। মাটির সঙ্গে সম্পৃক্ততা না থাকায় রোগবালাইয়ের আক্রমণ নেই। এ পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করে উদ্যোক্তা জিয়াউর রহমান প্রতি বছর আয় করছেন দেড় থেকে দুই লাখ টাকা।

Dhaka post

জিয়াউর রহমান বলেন, লেখাপড়া শেষে রাজশাহীর আকাফুজি এগ্রো টেকনালজি নামে একটি কৃষি খামারে চাকরি করতাম। ৮ বছর চাকরি শেষে বাড়ি ফিরে শুরু করি নার্সারির ব্যবসা। কয়েক বছরেই লাভের মুখ দেখি। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে চারা উৎপাদন করে কৃষকদের মাঝে স্বল্প মূল্যে বিক্রি করি। লাভবান হওয়ায় এক বিঘা জমি লিজ নেই। পরে পুরো জমিতেই বীজতলা তৈরি করি। খুলনা থেকে কোকোডাস্ট সংগ্রহ করে তাতে জৈব সারের (কেঁচো কম্পোস্ট) মিশ্রণ দিয়ে বিভিন্ন প্রকার সবজি ও গাছের চারা উৎপাদন করি।

তিনি আরও বলেন, ১০ হাজার প্লাস্টিকের ট্রে সংগ্রহ করি। এতে এক সঙ্গে এক লাখ চারা উৎপাদন করা হয়। ট্রেতে বীজ বপন শেষে ঢেকে দেওয়া হয় নেট দিয়ে। ফলে কোনো ধরনের কীটপতঙ্গ চারাগাছকে আক্রমণ করতে পারে না। চারাগুলো বেড়ে উঠে সুস্থ ও সবলভাবে।

Dhaka post

জিয়াউর রহমান বলেন, ক্যাপসিক্যাম, স্ট্রবেরি, হাইব্রিড মরিচ, লাউ, কুমড়া, তরমুজ, বাঁধাকপি, ফুলকপিসহ বিভিন্ন ধরনের ফল ও ফুলের চারা উৎপাদন করা হচ্ছে এই পদ্ধতিতে। সব খরচ বাদ দিয়ে মোটা অংকের টাকা আয় হচ্ছে।

কৃষক রুবেল হোসেন ও হাবিব জানান, গেল বছর কোকোডাস্ট পদ্ধতিতে উৎপাদিত বাঁধাকপির চারা নিয়ে জমিতে ভালো ফলন পেয়েছেন। তাই এবারও এসেছেন চারা সংগ্রহ করতে। সুস্থ, সবল ও বালাইমুক্ত চারা হলে ফসল ভালো হয়।

Dhaka post
 
স্কুলছাত্র শাওন ও আব্দুল আলিম জানায়, লেখাপাড়ার পাশাপাশি জিয়াউর রহমানের নার্সারিতে বিভিন্ন প্রকার চারা উৎপাদন হচ্ছে। এখান থেকে হাতে-কলমে প্রশ্ক্ষিণ নিয়ে আমরাও কৃষিতে অবদান রেখে আত্মনির্ভশীল হতে চাই।

গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন বলেন, কোকোডাস্ট পদ্ধতিতে জিয়াউর রহমানের চারা উৎপাদনের বিষয়টি আমরা জানি। কোকোডাস্টে পানি ধারণক্ষমতা অনেক বেশি। তাই যেকোনো বীজ থেকে চারা গজায় খুব সহজেই। জিয়াউর রহমানের বীজতলায় একসঙ্গে এক লাখ চারা উৎপাদন হচ্ছে। আমরা তার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছি।

এসপি

Link copied