পাহারা দিয়েও থামানো যাচ্ছে না সেলফি তোলা
নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার সিংধা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহ মাহাবুব মোর্শেদ কাঞ্চনের সূর্যমুখী খেত ফুলে ফুলে ভরে গেছে। আর এসব সূর্যমুখী ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য প্রতিদিনই ছুটে আসছেন আশপাশসহ দূর-দূরান্তের শত শত দর্শনার্থী। তারা ভিড় জমাচ্ছেন সূর্যমুখী ফুলের ওই খেতে।
স্থানীয় উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে স্থানীয় বর্গাচাষিদের মাধ্যমে এবারই প্রথমবারের এ সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন চেয়ারম্যান কাঞ্চন।
সূর্যমুখী খেত দেখতে আসা সোহেল খান নামে এক দর্শনার্থীর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘সূর্যমুখী ফুল দেখতে খুবই সুন্দর। এখানে অসংখ্য সূর্যমুখী একসঙ্গে দেখতে চমৎকার লাগে। সূর্যমুখীর সৌন্দর্য উপভোগ করতেই এখানে ছুটে এসেছি। কিছু সেলফিও তুললাম।’
চেয়ারম্যান শাহ মাহাবুব মোর্শেদ কাঞ্চনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘এ বছর তিনি তার চরসিংধা গ্রামে প্রায় দুই একর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। উৎপাদন খরচ পুষিয়ে লাভবান হওয়ার আশা করেছিলেন তিনি। কিন্তু খেতে পাহারা বসিয়েও দর্শনার্থীদের সেলফি তোলা ফেরানো যাচ্ছে না। সূর্যমুখী খেতে দর্শনার্থীরা ভেতরে প্রবেশ করায় তার অনেক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।’
চেয়ারম্যান বলেন, ‘সূর্যমুখী ফুল শুধু ফুলেই নয়। তা থেকে তেলও তৈরি হয়। যা আমরা অনেকেই জানি না। সেটা জানান দেওয়ার জন্যেই আমার এই উদ্যোগ। তার এই সূর্যমুখীর চাষ দেখে সিংধা ইউনিয়নের অন্য কৃষকরাও আগ্রহী হয়ে উঠছেন।’
বারহাট্টা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাইমিনুর রশীদ বলেন, এখানে প্রথমবারের মতো প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করা হয়েছে। মাঠে সূর্যমুখীর অবস্থা খুবই ভালো। হেক্টরপ্রতি প্রায় ২ হাজার কেজি বীজ পাওয়া যায়। সাধারণ ঘানিতে এই বীজ ভাঙা হয়। এর তেল খুবই পুষ্টিমান সম্পন্ন। বাজারে দামও অনেক বেশি। তাই এই ফসল চাষ করে সহজেই কৃষকরা লাভবান হবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সৌন্দর্যময় এই ফুল। মানুষের মনে প্রশান্তি এনে দেয়। কৃষিবান্ধব সরকারের কৃষি পুনর্বাসনের আওতায় সূর্যমুখীর বীজ কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করা হয়। ফসলের বৈচিত্র্য আনতে সূযর্মুখী ইতোমধ্যে অত্র অঞ্চলের মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে।’
বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গোলাম মোর্শেদ বলেন, ‘সূর্যমুখী চাষে এখানকার কৃষকরা অবশ্যই লাভবান হবেন। সূর্যমুখীর নানাবিধ ব্যবহার রয়েছে। এটি অসাধারণ একটি ফুল। যা দেখতে এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক ভিড় জমাচ্ছেন।’
জিয়াউর রহমান/এমএসআর