‘১০ বছর আগে হুইলচেয়ার বিতরণ করেছি, আজ ছেলের জন্য নিতে হলো’

‘জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি ইউএনডিপির অধীনে ইউপিপি প্রজেক্টের আওতায় প্রায় ১০ বছর আগে ২০১৩ সালে ২৫ জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুর মাঝে হুইলচেয়ার বিতরণ করেছি। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজকে নিজের ছেলের জন্যেই হুইলচেয়ার নিতে হলো।’ কাঁদতে কাঁদতে এভাবেই নিজের অনুভূতি জানাচ্ছিলেন মহিলা আনসার সদস্য রজিনা খাতুন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের নিয়ে তৈরি 'আনন্দধারা সোনামনি সেন্টারে' হুইলচেয়ার ও শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে রোজিনা খাতুন এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) সকালে জেলা শহরের শিবতলা উদয় সংঘ মোড়ে আনন্দধারা সোনামনি সেন্টারে হুইলচেয়ার ও শীতবস্ত্র বিতরণ করে ফাউন্ডেশন ফর উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড অ্যাসিসট্যান্স (এফডব্লিউসিএ)।
রোজিনা খাতুন তার বড় ছেলে রাইয়ান হোসেনের জন্য বিনামূল্যে হুইলচেয়ার নেওয়ার পর আবেগে আপ্লুত হয়ে বলেন, কোনোদিন স্বপ্নেও ভাবিনি নিজের ছেলের জন্য এভাবে হুইল চেয়ার নিতে হবে। যতক্ষণ অনুষ্ঠানে ছিলাম, সারাক্ষণ শুধু ১০ বছর আগের নিজের হুইলচেয়ার বিতরণ করার কথা মনে পড়েছে।
তিনি জেলা শহরের রেল স্টেশন জিয়ানগর এলাকার মনোয়ার হোসেনের স্ত্রী। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ১ ওয়ার্ড মহিলা আনসার দলের দলনেতা তিনি। বড় ছেলে রাইয়ান হোসেন (৭) ও রাফাত হোসেন (২) দুজনই বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু। ২০১০-২০১৪ সাল পর্যন্ত ইউএনডিপি'র ইউপিপি প্রজক্টে কাজ করেছেন রোজিনা খাতুন।
হুইলচেয়ার ও শীতবস্ত্র পেয়ে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের অভিভাবকরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ডেলাওয়ার স্টেট ইউনির্ভাসিটির অধ্যাপক ড. মুক্তি রানা, ফাউন্ডেশন ফর উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড অ্যাসিসট্যান্স-এফডব্লিউসিএ'র পরিচালক ড. সাদিকুর রহমান, কাউন্সিলর মতিউর রহমান, অ্যাডমিন অফিসার ফিজিওথেরাপিস্ট মো. শাহিন হোসেন, সাইকো সোসাল শিক্ষক মো নাহিদ বাবু, আরিফা খাতুনসহ অন্যান্যরা।
উল্লেখ্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছেলেমেয়েদের জন্য গত ৬ মাস আগে প্রতিষ্ঠিত হয় আনন্দধারা সোনামনি সেন্টার। সেখানে সিপি, ডাউন সিনড্রোম, বুদ্ধি প্রতিবন্ধীসহ অটিস্টিক শিশুরা পড়াশোনা করছে।
জাহাঙ্গীর আলম/আরকে