বিটিসিএলের টেলিফোন অচল, মাসে মাসে বিল সচল

ফোন ব্যবহার না করেও দিতে হচ্ছে বিল। সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বাসা-বাড়ির টেলিফোন পর্যন্ত বছরের পর বছর ধরে অচল অবস্থায় পড়ে আছে। দীর্ঘদিন ধরে লাইনে কোনো সংস্কার কাজ না করায় অধিকাংশ তারও নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু গ্রাহকদের ঠিকই প্রতি মাসে বিল বাবদ গুণতে হচ্ছে টাকা।
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) লাইনের দৃশ্য এটি।
কয়েকজন গ্রাহক ও সরকারি-বেসরকরি দপ্তরের প্রধানদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, টেলিফোন ব্যবহার না করতে করতে অনেকেই তাদের কার্যালয়ের টিঅ্যান্ডটি ফোন নম্বরটিও ভুলতে বসেছেন।
বিটিসিএল কর্তৃপক্ষ বলছেন, জনবল সংকটের কারণে বিচ্ছিন্ন হওয়া সংযোগ পুনরায় দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
সৈয়দপুর ডিজিটাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালে কোটি টাকা ব্যয়ে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের পাশে নিয়ামতপুরে আড়াই একর জমির ওপর টেলিফোন এক্সচেঞ্জটি ডিজিটাল হিসেবে উন্নীত করা হয়। এ এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে সংযোগের ক্ষমতা রয়েছে ৪০০০টি, কিন্তু বর্তমানে উপজেলার সব সরকারি-বেসরকারি কার্যালয়, আবাসিক এলাকাসহ মোট সংযোগ রয়েছে ২৫০টি। এসব সংযোগ বছরের অধিকাংশ সময় নানা কারণে বিকল থাকে।
সৈয়দপুর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত আনসার–ভিডিপি কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, আনসার–ভিডিপি কর্মকর্তা নুর বানু আকতার চেয়ারে বসে মুঠোফোনে কথা বলছেন। টেলিফোনের অবস্থা কী, জানতে চাইলে তিনি বলেন, টেলিফোন আছে সে কথা ভুলে গেছি। আপনি মনে করে দিলেন। এক বছর ধরে টেলিফোন সংযোগ নেই। সংযোগ নষ্টের কারণে টেলিফোন সেটটি কে কোথায় রেখেছে, তাও বলতে পারছি না। ফোন নম্বরটিই ভুলে গেছি কিন্তু প্রতিমাসে টেলিফোন বিল দেওয়া লাগছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার অন্যান্য সরকারি দপ্তরেরও একই অবস্থা। দীর্ঘদিন ধরে টেলিফোনগুলো অচল অবস্থায় পড়ে থাকলেও প্রতিমাসে দিতে হচ্ছে বিল।
সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন বলেন, আমি ২০১৭ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করছি। আমার অফিসে যে টেলিফোন রয়েছে তা আমার জানাই ছিল না। কেননা এই ৬ বছরে টেলিফোনের শব্দ কানে আসেনি। টেলিফোন বিভাগের লোকজনেরও দেখা মেলে না। প্রয়োজনীয় কাজ মুঠোফোনেই সারছি। অথচ প্রতি মাসে মিনিমাম বিল দিচ্ছি।
সৈয়দপুর ডিজিটাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জের জুনিয়র সহকারী ব্যবস্থাপক আব্দুল মান্নান বলেন, সব সংযোগ নয়, কিছু সংযোগ নষ্ট আছে। জনবল সংকটের কারণে সেগুলোতে পুনরায় সংযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বাকিগুলোতে টেলিফোন সেট পরিবর্তন করলে তারা কথা বলতে পারবেন। তবে কোনো গ্রাহক যদি লিখিত আবেদন দিয়ে লাইন বন্ধ করেন, তাহলে তার বিল দিতে হবে না।
লাইন বন্ধ না করার কারণে সর্বনিম্ন বিল দিতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
শরিফুল ইসলাম/এমজে