বঙ্গবন্ধুর জীবনগাঁথা জানতে রেল জাদুঘরে দর্শনার্থীদের ভিড়

Dhaka Post Desk

জেলা প্রতিনিধি, জয়পুরহাট

২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:৪৭ এএম


ট্রেনের একটি বগিকে সুন্দর করে সাজানো হয়েছে, তৈরি করা হয়েছে নান্দনিক একটি জাদুঘর। এর ভেতরে রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বর্ণাঢ্য জীবনগাঁথা। ১৯২০ সাল হতে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তার জীবনে ঘটে যাওয়া সব বিষয় তুলে ধরা হয়েছে রেলের ভ্রাম্যমাণ এই জাদুঘরের মাধ্যমে।

দেশের বিভিন্ন স্টেশনে রাখা হচ্ছে এই জাদুঘরটি। এবার সেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর রাখা হয়েছে জয়পুরহাট স্টেশনে। সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৬টা ১৫ মিনিটে উত্তরা ট্রেনের সঙ্গে বিরামপুর থেকে জয়পুরহাট স্টেশনে এটি এসেছে। রেল জাদুঘরটি প্রদর্শনের জন্য স্টেশনের তিন নম্বর লাইনে রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে রেল জাদুঘরটি মুগ্ধ করেছে দর্শনার্থীদের।

dhakapost

রেল জাদুঘরটি দেখতে আসা দর্শনার্থীরা জানান, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রেলের বগির ভেতরে ১২টি গ্যালারি রয়েছে। এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের ১৯২০ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত নানা দিক ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এর মধ্যে ভাষা আন্দোলন, ৬ দফা, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০-এর নির্বাচন, স্বাধীনতার ঘোষণা, মুজিবনগর সরকার, মুক্তিযুদ্ধ ও ১৬ ডিসেম্বরের মহান বিজয়সহ নানা ইতিহাস।

সেখানে বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত চশমা, আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা, বঙ্গবন্ধুর প্রিয় তামাক পাইপ, মুজিব কোট, বঙ্গবন্ধুর সমাধিস্থল, কমলাপুরের ৭১ এর বিজয়স্তম্ভ, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, শহীদ মিনার, মুজিব শতবর্ষের লোগো, বঙ্গবন্ধুর লেখা বই, মুজিবনগর স্মৃতিস্তম্ভ, পাকিস্তানিদের আত্মসমর্পণসহ নানা ছবি শোভা পাচ্ছে। ছবির পাশাপাশি ভিডিও চিত্রেও প্রদর্শিত হচ্ছে নানা বিষয়। অডিও সিস্টেমে সম্প্রচার করা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ভাষণসহ জীবনী।

dhakapost

এই জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য জীবনগাঁথা জানার চেষ্টা করছিল কিশোর জোবায়ের হোসেন তাহসান। চৌদ্দ বছর বয়সী এই কিশোর পড়তে জানে না, লিখতেও জানে না। অডিও শুনে বা ভিডিও দেখে অনেক কিছু জানার চেষ্টা করে। তার মা-বাবা ও আত্মীয়স্বজন বলতে কেউ নেই। থাকার জায়গাও নেই, জয়পুরহাট স্টেশনে থাকে। পড়তে না জানা এই কিশোর সারাদিন ট্রেনে চড়ে শিশুদের বই বিক্রি করে নিজের খরচ চালায়।

সে বলে, এর আগে এই ট্রেনটি (ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর) অন্য স্টেশনেও দেখেছি। আমি এই জাদুঘরে এসে ছবিগুলো দেখি, তবে পড়তে পারি না। তাই কানে হেডফোন দিয়ে কথাগুলো শুনি। এভাবে আমি বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অনেক কিছুই জেনেছি। এটি আমার অনেক ভালো লাগে।

dhakapost

জয়পুরহাট সরকারি কলেজের ছাত্র শয়ন কুণ্ডু বলেন, ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরটি অনেক সুন্দর। মুক্তিযুদ্ধের আগে এবং পরে বঙ্গবন্ধুর জীবনী এখানে রয়েছে। আমরা বইয়ে পড়লেও এখান থেকে অনেক কিছু জানতে পারছি।

এই জাদুঘর দেখাতে দুই ছেলেকে নিয়ে এসেছিলেন মীনা নাজনীন। তিনি বলেন, ১৯২০ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের নানা দিক ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ছেলেদের নিয়ে রেল জাদুঘর পুরোটা ঘুরে দেখেছি।

রেল জাদুঘরের দায়িত্বে থাকা আমজাদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এটি গোপালগঞ্জ স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে। এখন দেশের বিভিন্ন স্টেশনে কয়েকদিন করে রাখা হচ্ছে। জয়পুরহাট স্টেশনে দুই দিন থাকবে। এটি শিক্ষার্থী ও সর্বসাধারণের জন্য প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা এবং বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে।

চম্পক কুমার/এমজেইউ

Link copied