কুমিল্লায় পুলিশের ওপর হামলা, ১০ জন কারাগারে
কুমিল্লার দেবিদ্বারে প্রধান শিক্ষকের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভের সময় পুলিশের ওপর হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ তাণ্ডব চালানোর ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। মামলায় আটক ১০ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তারা হলেন- দেবিদ্বার উপজেলার মাশিকাড়া এলাকার বশির আহমেদের ছেলে লুৎফুর কবির (৩১), একই এলাকার সেলিম আহমেদের ছেলে শাহ পরান (৩০), মৃত আব্দুল হালিমের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৫০), আবুল কালাম ভূইয়ার ছেলে মনিরুজ্জামান ভূইয়া (৪৮), মোখলেসুর রহমানের ছেলে আলী আশরাফ (৪৭), মৃত আকরাম আলীর ছেলে আব্দুল কাদের (৫৫), শরবত আলীর ছেলে মো. সবুর (১৯), আবুল কাশেমের ছেলে জিয়াউর রহমান (৩২), মোখলেছুর রহমানের ছেলে ওয়ায়েজ কুরুনি (৩৫) এবং জব্বার আলীর ছেলে ইউনুস (৩৬)।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়। ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দেবিদ্বার-ব্রাহ্মণপাড়া সার্কেল) মো. আমিরুল্লাহ।
তিনি জানান, গতকাল বুধবার দুপুর থেকে দেবিদ্বারের মাশিকাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোকতল হোসেনকে অবরুদ্ধ করে তার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ করেন ওই এলাকার কয়েকশ মানুষ। এ সময় তারা বিদ্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। হামলায় দেবিদ্বার থানার ওসি কমল কৃষ্ণ ধরসহ ১৫ পুলিশ সদস্য আহত হন। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ সময় ১০ জনকে আটক করা হয়।
এ ঘটনায় দেবিদ্বার থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মোক্তার আহমেদ বাদী হয়ে দেবিদ্বার থানায় পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় ১০ জনের নাম উল্লেখসহ মোট ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়। মামলা দায়েরের পর আটক ১০ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কুমিল্লার দেবিদ্বারে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মাশিকাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোকতল হোসেনকে দিনভর অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এ সময় বিক্ষোভকারীরা প্রধান শিক্ষক ও তার জামাতার ব্যবহৃত দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন। দুপুর থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে। বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের কয়েকটি দরজা-জানালা ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আমিরুল্লাহ, দেবিদ্বার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। রাত ৯টার দিকে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে দেবিদ্বার থানার ওসি কমল কৃষ্ণ ধরসহ ১৫ পুলিশ সদস্য আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে ৫-৬ জন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আরিফ আজগর/আরএআর