ঠাকুরগাঁওয়ে অসহায়-হতদরিদ্রদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ

দিনের পর দিন বেড়েই চলছে ঠাকুরগাঁওয়ে শীতের তীব্রতা। তীব্র শীতে জড়োসরো হয়ে পড়েছে জেলা হতদরিদ্র মানুষেরা। দেখা দিয়েছে শীতবস্ত্রের অভাব। ঠিক এমনি সময়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া শীতবস্ত্র নিয়ে মানুষেরা দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।
‘আমরা আমাদের পাশের শীতার্ত মানুষের শীত নিবারণের সাধ্যমতো পাশে থাকি’ স্লোগান সামনে রেখেই ঠাকুরগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বিতরণ করা হচ্ছে শীতবস্ত্র (কম্বল)।
আমাদের মতো দরিদ্র মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই প্রধানমন্ত্রীকে। সেই সঙ্গে ধন্যবাদ জানাই ডিসি স্যারকে। তিনার মাধ্যমে হয়তো আজ আমরা এই সুযোগ সুবিধাগুলো পাচ্ছি
ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন উভয়ে মাঠপর্যায় ও বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বিতরণ করা হচ্ছে এই শীতবস্ত্রগুলো। শুধু দিনেই নয়, রাতেও বাড়িতে গিয়েও দেওয়া হচ্ছে এসব কম্বল।
জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে প্রায় ২৬ হাজার কম্বল এসেছে। দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৩০ লাখ টাকা এসেছে, যার মধ্যে প্রতিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অসহায়দের মাঝে কম্বল বিতরণের জন্য ৬ লাখ করে টাকা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গত বুধবার আবারো দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনের নামে আবারো ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে অসহায়দের জন্য। জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে পাবে ৪৬০টি করে কম্বল।
জানা যায়, সরকারি উদ্যোগে গত ২০ ডিসেম্বর শহীদ মোহাম্মদ আলী স্টেডিয়াম মাঠে ও সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অসহায় ৬০০ শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, ২২ ডিসেম্বর শহরের সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে শতাধিক অসহায়দের মাঝে কম্বল বিতরণ, ২৫ ডিসেম্বর সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে ৭০ জন ভিক্ষুক ও প্রতিবন্ধীর মাঝে কম্বল বিতরণ, ২৪ ডিসেম্বর রাতে জগন্নাথপুর ও বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের দুস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ, ২৩ ডিসেম্বর সালন্দর ইউনিয়নের ১০০ জন দুস্থর মাঝে কম্বল বিতরণ, ১৫ ডিসেম্বর সদর উপজেলার রুহিয়া পশ্চিমে ৩০০ জন দুস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ, ১৪ ডিসেম্বর সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নে ৩০০ জন দুস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ, ৯ ডিসেম্বর আবারো সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি ইউনিয়নে ৩০০ জন দুস্থর মাঝে কম্বল বিতরণ, ৬ ডিসেম্বর সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নে ৩০০ জন দুস্থর মাঝে কম্বল বিতরণ, ৩ ডিসেম্বর সদর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নে ৩০০ জন দুস্থর মাঝে কম্বল বিতরণ, ২ ডিসেম্বর আউলিয়াপুর ইউনিয়নে ৩০০ জন দুস্থর মাঝে কম্বল বিতরণ। এর আগে ৩০ নভেম্বর সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নে ৩০০ জন দুস্থর মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়।
এ ছাড়া, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নবীণ আলোর পক্ষ গত ১৭ ডিসেম্বর প্রায় ১০০ কম্বল বিতরণ করা হয় বলে জানায় সংগঠনটি।
সদর উপজেলার বেগুনবাড়ী ইউনয়িনের বাসিন্দা আম্বিয়া খাতুন বলেন, অসহায় মানুষ আমরা। শীতে অনেক ঠান্ডা লাগে। কম্বল কোথায় পাব, তা জানা ছিল না। এরপর ইউএনও স্যার একদিন রাতে আমার বাসায় আসে আমাকে কম্বল দিয়েছে। সেটি নিয়ে কিছুটা হলেও শান্তিতে আছি। এভাবে রাতে বাসায় এসে কম্বল দিবে, তা কখনো ভাবিনাই।
সালন্দর ইউনিয়নের বাসিন্দা জয়নাল আবেদিন জানান, আমাদের মতো দরিদ্র মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই প্রধানমন্ত্রীকে। সেই সঙ্গে ধন্যবাদ জানাই ডিসি স্যারকে। তিনার মাধ্যমে হয়তো আজ আমরা এই সুযোগ সুবিধাগুলো পাচ্ছি।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক কে এম কামরুজ্জামান সেলিম জানান, এই জেলায় শীত অনেক বেশি থাকে। আমরা হতদরিদ্র পরিবাররের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ করে যাচ্ছি। এ ছাড়া জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। আমরা চেষ্টা করব যাতে জেলার একটি মানুষও এই শীতে কষ্ট না পায়।
এনএ