টাকা নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় হোটেলে তরুণীকে গলাকেটে হত্যা

Dhaka Post Desk

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ

২১ মার্চ ২০২৩, ০১:১৩ পিএম


টাকা নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় হোটেলে তরুণীকে গলাকেটে হত্যা

ময়মনসিংহ নগরীর ছোট বাজার এলাকায় নিরালা রেস্ট হাউস নামে একটি আবাসিক হোটেলে তরুণীকে গলাকেটে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। এ ঘটনায় ঘাতক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত যুবকের নাম রাকিবুল ইসলাম রাকিব (২৩)। তিনি মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার নতুন চরচাষী এলাকার খোকন মিয়ার ছেলে।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বেলা ১১টায় জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ। এর আগে গত রোববার (১৯ মার্চ) রাতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রাকিবের অবস্থান শনাক্ত করে মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ সুপার জানান, আসামি রাকিব পড়াশুনার পাশাপাশি সমাজ সেবা অফিসে আউট সোর্সিংয়ের কাজ করে। গত ১৪ মার্চ সন্ধ্যা ৭টার দিকে সে আগারগাঁও অফিস থেকে মিরপুর শেওড়া পাড়া বাসস্ট্যান্ড যায়। শেওড়া পাড়া ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে যাওয়ার সময় এক পতিতা তাকে ডাক দেয়। তখন রাকিব তার সঙ্গে কথা বলে এবং তাকে ময়মনসিংহ যাওয়ার জন্য প্রস্তাব দেয়। ওই নারী পাঁচ হাজার টাকা নেওয়ার শর্তে ময়মনসিংহ যেতে রাজি হলে রাত ১০টার দিকে রাকিব তাকে নিয়ে মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে বাসযোগে রওনা দেয়। এরপর রাত দেড়টার দিকে ময়মনসিংহে পৌঁছে হোটেল নিরালায় তারা স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে ২০৯ নম্বর কক্ষে ওঠে।

মাছুম আহাম্মদ আরও জানান, ওই নারী পরদিন ১৫ মার্চ সকাল ১০টার দিকে যাওয়ার সময় শর্ত অনুযায়ী রাকিবের কাছে ৫ হাজার টাকা চায়। কিন্তু রাকিব এক হাজার টাকা দেয়। এ নিয়ে হোটেল কক্ষে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে রাকিব বিকাশ থেকে টাকা উত্তোলনের কথা বলে হোটেল থেকে বাইরে গিয়ে ১০০ টাকার একটা চাকু কিনে নিয়ে আসে। পরে কক্ষের দরজা লাগিয়ে ওই তরুণীকে গলায় চাপ দিয়ে ধরে রাথরুমে নিয়ে গিয়ে চাকু দিয়ে গলাকেটে হত্যা করে এবং মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার জন্য দুই হাতের রগ কেটে দেয়। তারপর হোটেল কক্ষে তালা দিয়ে পালিয়ে যায়।

ঘটনার তিন দিনের মাথায় শনিবার (১৮ মার্চ) দুপুরে ওই হোটেল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে নিহত তরুণীর পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় থানা পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে তদন্ত ও অভিযান শুরু করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। পরে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে হত্যাকারীর পরিচয় ও অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তদন্তককারী কর্মকর্তা এসআই শাহ মিনহাজ উদ্দিন, এসআই নিরুপম নাগ, এসআই আনোয়ার হোসেন, কনস্টেবল মিজানুর রহমান অভিযান চালিয়ে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থেকে ঘাতক রাকিবকে গ্রেপ্তার করে।

কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ জানান, আসামি রাকিব হত্যাকাণ্ডের বিবরণ দিয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। পরে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

উবায়দুল হক/আরকে 

Link copied