বিধবা বোনকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার প্রতিবাদ করায় শহিদ খুন

যশোরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে যুবক খুনের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। বিধবা বোনকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার প্রতিবাদ করায় রিকশাচালক শহিদকে হত্যা করা হয় বলে জানায় পুলিশ। নিহত শহিদুল ইসলাম শহিদ সদর উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের পাগলাদাহ গ্রামের বশির আহম্মেদের ছেলে।
এ ঘটনায় এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- পাগলাদাহ গ্রামের মানিক জমাদ্দারের ছেলে ইয়াসিন হোসেন ওরফে ইরান এবং আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে রিয়াজ হোসেন। রোববার তাদেরকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত।
রোববার ভোরে চৌগাছা উপজেলার মালিগাতি গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয় পাগলাদাহ গ্রামের মাঠপাড়ার মানিক মিয়া জমাদ্দারের ছেলে ইরান হোসেন ও আনারুল ইসলামের ছেলে রিয়াজ হোসেনকে। এর আগে শনিবার রাতে শহীদের বাবা বশির আহম্মেদ কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় মোট সাতজনকে আসামি করা হয়েছে।
পলাতক আসামিরা হলেন- জাহাঙ্গীরের ছেলে মিরাজ, তার ভাই আলিফ, রিয়াজ, পিয়াস, একই গ্রামের আমিনুল এবং অজ্ঞাতনামা আরও চার থেকে পাঁচজন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, নিহত শহিদের বিধবা বোন শাহিদা বেগমের প্রতি দীর্ঘদিন ধরে কুনজর দিয়ে আসছিল আসামি মিরাজ। সে প্রায়ই শাহিদার সঙ্গে খারাপ ও অশালীন কথাবার্তা বলত। বিষয়টি জানতে পেরে শহিদ এর প্রতিবাদ করলে উভয়ের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। শুরু হয় শক্রতা।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, নিহত শহিদুল ইসলাম শহিদের বিধবা বোন রাশিদা বেগমের মালিকানাধীন একটি অটোরিকশা চালিয়ে মিরাজ জীবিকা নির্বাহ করতেন। কয়েকদিন আগে তিনি রাশিদা বেগমকে কুপ্রস্তাব দিলে তিনি মিরাজকে রিকশা চালাতে নিষেধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মিরাজ গত ১০ ডিসেম্বর বাড়িতে এসে গালিগালাজ ও কুপ্রস্তাব দেয়। এ নিয়ে শহিদ প্রতিবাদ করলে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৮টার দিকে অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন শহিদ। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে গ্রামের মধ্যপাড়ায় আমিনুল ইসলামের বাড়ির সামনে পৌঁছালে আসামিরা তাকে পথরোধ করে। খবর পেয়ে বাবা বশির আহম্মেদ ঘটনাস্থলে গিয়ে ছেলেকে রক্ষা করার চেষ্টা করলে আসামিরা এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত ও মারধর করে শহিদকে গুরুতর জখম করে।
স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় শহিদকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৫টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আনিছুর রহমান খান জানান, গ্রেপ্তার দুই আসামিকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হবে। গ্রেপ্তার ইরান হোসেন ও রিয়াজ হোসেনের বিরুদ্ধে হত্যা ও মারামারিসহ মোট চারটি মামলা রয়েছে।
রেজওয়ান বাপ্পী/আরএআর