বঙ্গবন্ধুকে জানতে ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বিতরণ করছেন এমপি ইব্রাহিম

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জানতে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে ও জানাতে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বিতরণ করছেন নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) আসনের সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম।
জানা যায়, চাটখিল-সোনাইমুড়ীর সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে ২৫ হাজার অসমাপ্ত আত্মজীবনী বিতরণ করছেন সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম। ইতোমধ্যে প্রায় ১৭ হাজার বই বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া এসব শিক্ষার্থীদের একটি করে টিফিন বক্সও দেওয়া হয়েছে।
চাটখিল কামিল মাদরাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী খালেদ সাইফুল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী দেওয়া হচ্ছে যেন আমরা দেশপ্রেমিক হতে পারি। বঙ্গবন্ধু এমন মহানায়ক যিনি জীবনের এক-তৃতীয়াংশ জেলে কাটিয়েছেন এবং মানবতার জন্য নিজের সারা জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। বইটি পড়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুযায়ী কাজ করতে চাই।
মেহেদী হাসান নামের অষ্টম শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বঙ্গবন্ধু না থাকলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। বইটির মাধ্যমে দেশের ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধুর জীবনী সম্পর্কে জানা যাচ্ছে। বিনা মূল্যে এই সুযোগ করে দিচ্ছেন আমাদের এমপি মহোদয়। এমন সুযোগের জন্য উনার কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।
চাটখিল সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আবির হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এমপি স্যার শুধু বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী দিচ্ছেন না। পাশাপাশি তিনি টিফিন বক্সও দিচ্ছেন। এছাড়া প্রতি অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর উপর কুইজে বিজয়ীদের সারা জীবনের শিক্ষার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এমন সংসদ সদস্য সারা দেশে আছে কিনা আমাদের জানা নেই।

নুসরাত জাহান নামের একাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পেয়ে আমি খুব খুশি। এটা মহৎ উদ্যোগ। বইটি পড়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ জানতে পারব। সে অনুযায়ী চলতে পারব। বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ ও দেশপ্রেমের উজ্জ্বল বর্ণনা বইটিতে রয়েছে।
এর আগে নদনা ইউনিয়নের রুবীরহাট বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীর উপর বিশেষ কুইজ প্রতিযোগিতার উত্তর দেওয়ায় সোনাইমুড়ীর দুই শিক্ষার্থীর শিক্ষার দায়িত্ব নিলেন সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম।
তারা হলো- নদনা ইউনিয়নের রুবীরহাট বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী ও পাঁচবাড়ি গ্রামের মৃত ছালেহ আহমদের মেয়ে নুসরাত জাহান এবং একই স্কুলের ১০ শ্রেণির শিক্ষার্থী ও আফজল পাটওয়ারী বাড়ির জিয়া উদ্দিন তানসেনের ছেলে মিনহাজ উদ্দিন শিখর।
পিতৃহীন নুসরাত জাহান কান্নাজড়িত কণ্ঠে ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি কখনো কল্পনা করিনি আমার শিক্ষার দায়িত্ব ইব্রাহিম এমপি স্যার গ্রহণ করবেন। তিনি যখন জানলেন আমার বাবা নেই তখন আমাকে তার সন্তান হিসেবে ঘোষণা দেন এবং বলেন তিনিই আমার বাবা।
আরেক শিক্ষার্থী মিনহাজ উদ্দিন শিখর ঢাকা পোস্টকে বলেন, বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীর উপর প্রশ্ন করলে আমি সঠিক উত্তর প্রদান করি। আমার বাবা একজন কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক। আমার পড়াশোনা নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না। সংসদ সদস্য এ এইচ এম ইব্রাহিম স্যারকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এ বিষয়ে সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস জানতে হবে। নতুন প্রজন্মকে যদি সঠিক ইতিহাস না জানাতে পারি তাহলে সংসদ সদস্য হিসেবে তার দায়ভার আমার উপরেও আসবে। সেই দায়িত্ববোধ থেকে নির্বাচনী এলাকার সকল প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৭০ ভাগ বই বিতরণ শেষ হয়েছে। অল্প কিছু দিনের মধ্যে বাকিগুলো বিতরণ শেষ হবে।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকে জানলে দেশের সঠিক ইতিহাস জানা হবে। তিনি এ দেশের স্বপ্নদ্রষ্টা। বর্তমানে তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে আমাদের দেশ নিরাপদ। শেখ হাসিনা শিক্ষার মান উন্নয়নে নানা প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। তাই জাতির পিতা সম্পর্কে জানতে ও জানাতে আমি এবং ওহাব তৈয়বা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
শিক্ষার দায়িত্ব গ্রহণ সম্পর্কে সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম বলেন, শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য কুইজ প্রতিযোগিতা ও প্রতি স্কুলের কুইজ বিজয়ী দুইজনের শিক্ষার দায়িত্ব গ্রহণ করি। আমার বাবা-মায়ের নামে গঠিত ওহাব তৈয়বা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের পক্ষ থেকে তাদের সকল খরচ বহন করা হবে।
হাসিব আল আমিন/এমজেইউ