সেই রাজ্জাকের পরিবারের মুখে হাসি

বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের অসহায় রাজ্জাক আলীর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে ইরামন ফাউন্ডেশন নামে একটি সামাজিক সংগঠন। গতকাল বুধবার (১৭ মে ) বিকেলে ইরামন ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে রাজ্জাক আলীর বাড়িতে গিয়ে নগদ অর্থ, বাছুরসহ গাভি ও নতুন ঘর করার জন্য টিন উপহার দেওয়া হয়।
এ সময় ইরামন ফাউন্ডেশনের পক্ষে সাংবাদিক তানজীম আহমেদ, শামীম হাসান রাব্বি, ঢাকা পোস্টের সংবাদদাতা শেখ আবু তালেব, খানপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ল্ডের ইউপি সদস্য শেখ কামাল ও স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ২ এপ্রিল ‘৭ বছর ধরে বিছানায় বন্দী রাজ্জাক, জীবন কাটছে অনাহারে-অর্ধাহারে’ শিরোনামে ঢাকা পোস্ট একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি ইরামন ফাউন্ডেশন নামে ঢাকার একটি সামাজিক সংগঠনের নজরে এলে অসহায় রাজ্জাকের পরিবারের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় তারা।
রাজ্জাকের স্ত্রী নাজমুন নাহার জানান, স্বামীর আয়েই চলতো সংসার। নারকেল গাছ থেকে পড়ে এখন আর চলতে পারেন না তিনি।
তিনি বলেন, ‘কী করব, পরের বাড়ি কাজ করে কোনো রহম বাঁইচতিছি। মেয়ে দুইডারে আর পড়াতি পারিনি, বিয়ে দিছি। ছেলেডায় পড়তি চায়, কি করে পড়াব? কাজ করে যা পাই বাজার খরচ আর তার ওষুধই হয় না।’
নাজমুন নাহার বলেন, ‘ঢাকা পোস্টে আমাদের অসহায়ত্বের খবর দেখে ঢাকার ইরামন ফাউন্ডেশনের এক ভাই আমারে ফোন দিয়ে খোঁজখবর নেন। পুরোনো টিনের ঘরটা কোনো রকমে টিকে ছিল। তারা নতুন টিন কিনে দিছে। ঘরে এখন নতুন টিন লাগাবো। কোনো সম্বল ছিল না একটি বাচুরসহ গরু কিনে দিছে, সঙ্গে নগদ টাকাও দিয়েছে। আমি খুব খুশি।’
অসহায় রাজ্জাক আলী বলেন, ঢাকা পোস্ট সংবাদ প্রচার করে আমার পারিবারের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। কিছুদিন আগে বাঁধন মানব উন্নয়ন সংস্থা আমাকে নগদ অর্থ ও ঈদের পোশাক উপহার দিয়েছে। ঢাকা থেকে ইরামন ফাউন্ডেশন আমাকে নগদ টাকা, বাচুরসহ গাভি ও ঘর বানতে টিন উপহার দিয়েছে। আমি ঢাকা পোস্টের কাছে কৃতজ্ঞ।
ইউপি সদস্য শেখ কামাল বলেন, ঢাকা পোস্টে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি ইরামন ফাউন্ডেশনের নজরে আসে। সংগঠনটি মানবতার সেবায় এগিয়ে এসেছে। আমি তাদের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। এভাবে যদি সামাজিক সংগঠনগুলো অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়, তাহলে পিছিয়ে পড়া মানুষ একটু ভালোভাবে বাঁচতে পারবে।
ইরামন ফাউন্ডেশনের আজীবন সদস্য জয় মিত্র বলেন, ঢাকা পোস্টে প্রকাশিত অসহায় রাজ্জাক আলীর সংবাদটি আমাদের দৃষ্টিতে আসে। পরে আমরা বিভিন্নভাবে খোঁজখবর নিয়ে রাজ্জাক ও তার পরিবারেকে সহযোগিতার সিদ্ধান্ত নিই। মূলত স্থানীয়ভাবে কথা বলে তাদের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় রেখেই আমরা গরু, টিন ও নগদ অর্থ প্রদান করেছি। আশা করি ভবিষ্যতে পরিবারটি কিছুটা হলেও ভালো থাকবে।
ইরামান ফাউন্ডেশন দীর্ঘদিন ধরে দেশের উপকূলীয় এলাকা, পাহাড়ি অঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় ডিপ টিউবওয়েল স্থাপন, বাসস্থান নির্মাণ, অসহায়দের চিকিৎসাসহ মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে।
আরএআর