আওয়ামী লীগের পতনের অপেক্ষায় দিন গুনছে মানুষ : মির্জা আব্বাস
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, বিএনপির মিটিং সারা বাংলাদেশের ঘরে ঘরে হচ্ছে এখন। বাংলাদেশের মানুষ অপেক্ষায় দিন গুনছে কখন আওয়ামী লীগের পতন ঘটবে। সারা বাংলাদেশের মানুষ অতিষ্ট হয়ে গেছে আওয়ামী লীগের অত্যাচারে। বাংলাদেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, কথা বলার অধিকার কিছুই নেই। এগুলো দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান।
শুক্রবার (২৬ মে) সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জয়নগর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা বিএনপি আয়োজিত জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, আজকে আমাদের কথা বলার অধিকার নেই, কথা শুনার অধিকার নেই। আমাদের মিছিল-মিটিং করার অধিকার নেই, আমাদের পেটে ভাত নেই। বাংলাদেশের সকল টাকা লুট হয়ে যাবে, আমরা বসে বসে তামাশা দেখবো। বাংলাদেশের জনগণ ১৪ বছর এই তামাশা দেখেছে, এই তামাশা আর দেশের জনগণ দেখতে চায় না।
তিনি বলেন, জনগণ চায় এই সরকারের পতন এবং ভোটের মাধ্যমে রাজনৈতিকভাবে পতন। যদিও এই সরকার নিশি রাতের সরকার, ভোট চোরের সরকার, এই সরকার জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসেনি। যারা জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসেনি, তারা কখনই দেশের জনগণের মঙ্গল চিন্তা করতে পারে না। ডলার ও টাকা পাচার হওয়াতে আজকে আমাদের দেশে কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে। এই সংকটের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য আমরা মিটিং করছি।
মির্জা আব্বাস বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আপনার কত টাকা ঋণ জানেন? আজকে যে শিশুটি জন্মগ্রহণ করেছে তার মাথায় এক লাখ টাকার ওপরে ঋণ। আর আপনাদেরও একই অবস্থা। এই ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে বাংলাদেশের মানুষ আজকে দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। এই সরকার এতো টাকা পাচার করেছে যে আপনার মাথায় এক লাখ টাকা ঋণ হয়ে গেছে।
বর্তমান সরকারের শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারের কথা তুলে ধরে মির্জা আব্বাস বলেন, কামাল সাহেব বললেন, ‘জনগণ বাজারে গিয়ে কাঁদে।’ জনগণের এই সমস্ত দুর্দশা থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র রাস্তা হলো এই সরকারের বিদায়।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের কয়েক দিন আগে বলেছেন, বিএনপি যেখানেই মিটিং করবে, সেখানেই আওয়ামী লীগ শান্তি মিটিং করবে। সে দিন হঠাৎ করে মুখ ফসকে কাদের সাহেব বলে ফেলেছেন, এখন থেকে শান্তি মিটিং নয়, এখন থেকে অশান্তির মিটিং হবে। এরপর পরই তিনি বললেন, না আমরা প্রতিরোধ মিটিং, সভা করবো।
মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা ৭১ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলাম, পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলাম। আপনারা কিসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করবেন। বাংলার মানুষ যখন অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, ক্ষুধার জ্বালা মেটানোর জন্য, কথা বলার অধিকারের জন্য, ভোটের অধিকারের জন্য রাজপথে নামে, তখন আপনার প্রতিরোধ করবেন। এই তো আপনাদের মতলব। দেশের জনগণ আর আপনাদের এই সমস্ত প্রতিরোধ সহ্য করবে না। প্রতিরোধ যদি আপনার করেন, সেই প্রতিরোধে বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিরোধ হবে, কাউকে ছেড়ে দেওয়া হবে না।
জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতার সভাপতিত্বে এবং বিএনপি নেতা গোলাম কিবরিয়া সাঈদের সঞ্চলনায় জনসমাবেশে ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটো, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এসএ জিন্নাহ কবির, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরতাজ আলম বাহার, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কাজী মোস্তাক হোসেন, সদস্য সচিব তুহিনুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. জিন্নাহ খান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আবদুল খালেক প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সোহেল হোসেন/আরএআর