ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাত্রদলের ২ পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ৩ মামলা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে সোমবার হওয়া সংঘর্ষের ঘটনায় দু’টি মামলা হয়েছে। পুলিশ বাদী হয়ে মঙ্গলবার সদর থানায় পৃথক এ দু’টি মামলা দায়ের করেন। দু’টি মামলায় উভয়পক্ষের ৮০ জনের বেশি নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর আগে শনিবার রাতের ঘটনায় দায়ের করা আরেকটি মামলায়ও উভয়পক্ষের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার জেলা ছাত্রদলের নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর থেকে পাঁচ দিন ধরে দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। আর এ বিরোধকে কেন্দ্র করে অস্ত্রের ঝনঝনানি ও ককটেলের দাপট দেখছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ। তবে মঙ্গলবার কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
তিনদিন ধরে নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলার পর সোমবার দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় অন্তত ২০-২৫ জনের হাতে রামদা দেখা যায়। বিস্ফোরণ ঘটানো হয় অর্ধ শতাধিক ককটেল। কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হওয়ায় ২০ মিনিটের মত যান চলাচল বন্ধ থাকে। এর আগে দু’পক্ষই লোকনাথ দিঘির পাড়ে পৃথক কর্মসূচি দিলে প্রশাসন কঠোর অবস্থান নেয়। এ ঘটনায় সদর থানার এসআই রাকিবুল ইসলাম ও সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। একটি মামলায় ছাত্রদলের সদ্য বিদায়ী আহ্বায়ক ফুজায়েল চৌধুরী রুবেলকে ও আরেকটি মামলায় জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছীন মাহমুদকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। দু’জন একই পক্ষের লোক হিসেবে পরিচিত।
নেতাকর্মীরা জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের সাত সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে শাহীনুর রহমান শাহীনকে আহ্বায়ক ও সমীর চক্রবর্তীকে সদস্য সচিব করা হয়। সাত সদস্যের কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হলেন এলভিন লস্কর, সাজিদ আহমেদ, রেজাউল হক শীষ, আবদুল গাফফার রিমন ও সাইফুল ইসলাম ফাহিম। ওই কমিটি ঘোষণার পর থেকেই উত্তেজনা দেখা দেয়। কমিটি ঘোষণার পর গত শুক্রবার সকালে নব-গঠিত কমিটির নেতারা জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক আবু শামীম মোহাম্মদ আরিফের কান্দিপাড়ার বাসায় শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান। বিষয়টি জানতে পেরে বিদায়ী কমিটির আহ্বায়ক রুবেল চৌধুরী ফুজায়েল ও সদ্য বিদায়ী সদস্য সচিব মহসিন মিয়ার নেতৃত্বে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আবু শামীমের বাড়িতে হামলা করে। একইদিনে সদ্য ঘোষিত জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাহীনুর রহমান শাহীন ও জেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক পৌর কাউন্সিলর কাউসার মিয়ার বাড়ি হামলা চালান বিদায়ী কমিটির নেতারা। শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মাহমুদ ও জেলা ছাত্রদলের বিদায়ী কমিটির আহ্বায়ক রুবেল চৌধুরী ফুজায়েলের নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আবু শামীম মোহাম্মদ আরিফ ও জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক শাহীনুর রহমানের বাড়িতে পুনরায় হামলা চালান। এ সময় হামলাকারীরা ২০-২৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় ও কয়েক রাউন্ড গুলি নিক্ষেপ করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, ছাত্রদলের নতুন কমিটি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। এ নিয়ে তিনটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদেরকে গ্রেপ্তারে একাধিক টিম কাজ করছে।
বাহাদুর আলম/আরকে