অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের বিচার আল্লাহর আদালতে হবে

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, আমি একজন নির্বাচিত পৌর মেয়র। আমার সঙ্গে যা হচ্ছে তাতে আমার সম্মানে আঘাত লেগেছে। আমি শুধু বলবো যারা এ সকল ঘটনা ও অপকর্মের সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার জনতার আদালত ও আল্লাহর আদালতে একদিন হবে ইনশাআল্লাহ।
সোমবার (২৯ মার্চ) বিকেল ৪টায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
কাদের মির্জা বলেন, আজ আমার দলের গ্রেফতার তিনজন কর্মীকে কোর্টে জামিন শুনানিতে উপস্থিত করার কথা ছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তাদেরকে কোর্টে হাজির করা হয়নি। বর্তমানে জেলে আমাদের ৯ জন নিরীহ নেতাকর্মী আছেন। তাদের ওপর জেলে অনেক অত্যাচার করা হচ্ছে। আত্মীয়-স্বজন ও দলীয় লোকজন দেখা করতে গেলে তাদেরকে দেখা করতে দেয় না। অথচ প্রতিপক্ষের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা তাদের পক্ষের গ্রেফতার সন্ত্রাসীদের দেখতে গেলে তাদেরকে ভিআইপি হিসেবে দেখা করতে দেওয়া হয়।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, করোনাকালে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ও বসুরহাট পৌরসভা এলাকায় করোনার প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় বিশেষ অবদান রাখায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সেলিম ও চারজন মাঠ পর্যায়ের কর্মীকে পুরস্কৃত করার সিদ্ধান্ত ছিল। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা যথা সময়ে পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত হয়। কিন্তু পৌর কার্যালয়ের সামনে ডিউটিরত পুলিশ ইন্সপেক্টর সামসুদ্দিন ও এডিশনাল এসপি শামীম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সেলিমকে পৌরসভা কার্যালয়ে প্রবেশ করতে বাধা দেন। তাৎক্ষণিক আমি ডাক্তার সাহেবকে পৌরসভা কার্যালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়ার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের অনুরোধ করি। আমার অনুরোধেও তারা ডা. মো. সেলিমকে প্রবেশ করতে দেননি, উল্টো আমাকে লাঞ্ছিত করেন।
গতকাল পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে থেকে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি তিনটি মোটরসাইকেল নিয়ে যায়। এর মধ্যে একটির বৈধ কাগজপত্র ছিল, দুটির বৈধ কাগজপত্র ছিল না। কোম্পানীগঞ্জে চলাচলকারী মোটরসাইকেলের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ অবৈধ। এ সকল অবৈধ মোটরসাইকেল কোম্পানীগঞ্জ থানার সহযোগিতায় চলাচল করে। কোম্পানীগঞ্জের দুর্নীতিবাজ ওসি, মাদক সম্রাট দুর্নীতিবাজ ওসি (তদন্ত) এবং কোম্পানীগঞ্জ থানার গোলঘরে সালিস বাণিজ্যের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া এসআই মাহফুজ কোম্পানীগঞ্জের সকল অপকর্মের সঙ্গে জড়িত।
কাদের মির্জা বলেন, কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও আমার নির্মিত আইসোলেশন সেন্টার ভেঙে অস্ত্রধারীদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন এবং তার উপজেলা চত্বরে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের একত্র করে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বসুরহাট পৌরসভা কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছেন। এই ইউএনও আমার দলের একজন সহসভাপতিকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন- মির্জার কাছে কেন যান? একজন সাংবাদিককে বলেছেন- মির্জা তো দূরের কথা ওবায়দুল কাদেরের কথাও আমি শুনবো না। উপরোক্ত কারণসমূহে আমি পৌরসভার একজন নির্বাচিত মেয়র হিসেবে আমার সম্মানে আঘাত লেগেছে। আমি শুধু বলব যারা এ সকল ঘটনা ও অপকর্মের সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার জনতার আদালত এবং আল্লাহর আদালতে একদিন হবে ইনশাআল্লাহ।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। বসুরহাট পৌরসভায় দ্বিতীয় মেয়াদে গত ডিসেম্বরে নির্বাচনের আগে বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলে আলোচনায় আসেন তিনি। স্থানীয় রাজনীতির বিভিন্ন ইস্যুতে দলীয় প্রতিপক্ষের সঙ্গে তার বিরোধের ঘটনায় গত এক মাসে দুটি পৃথক সংঘর্ষে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এসব ঘটনায় একাধিক মামলাও করা হয়েছে।
হাসিব আল আমিন/আরএআর