‘২৮ হাজার টাকার অ্যান্টিভেনম পুশ করেও ভাইকে বাঁচানো গেল না’

চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার চন্দবাস গ্রামে সাপের কামড়ে জুলফিকার আলী ভুট্ট (৩৭) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার (১ সেপ্টম্বর) ভোরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে জুলফিকারের পায়ে একটি বিষধর সাপ কামড় দেয়। এদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে পরিবারের সদস্যরা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে সরকারিভাবে অ্যান্টিভেনম (বিষ প্রতিষেধক) সাপ্লাই না থাকায় সময়মতো রোগীকে দেওয়া সম্ভব হয়নি।
জুলফিকারের ভাই ফারুক বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ধানের খেতে বিষ দেওয়া সময় একটি বিষধর সাপ তার পায়ে কামড় দেয়। বিষয়টি বাড়িতে এসে পরিবারকে জানালে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে সরকারিভাবে অ্যান্টিভেনম সাপ্লাই না থাকায় আমার ভাইয়ের অবস্থা প্রতি মিনিটে মিনিটে অনবতি হতে থাকে। চিকিৎসক দুই ধাপে রোগীর শরীরে ২০টি ইনজেকশন দিতে বলেন। প্রথমে একটি ফার্মেসিতে ১০টি অ্যান্টভেনম ইনজেকশন পাওয়া গেলেও বিভিন্ন ফার্মেসিতে খোঁজাখুঁজি করে বাকি ১০টি পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে ওই রাতেই এক ফার্মেসি মালিকের বাড়িতে গিয়ে বাকি ১০টি ইনজেকশন কিনে আনি। আমরা গরিব মানুষ। অনেক কষ্টে ২৮ হাজার টাকা ম্যানেজ করে ২০টি অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন পুশ করেও ভাইকে বাঁচাতে পারলাম না। আমাদের মতো বিপদে যেন আরও কেউ না পড়ে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য খলিলুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, জুলফিকার খুবই ভালো মানুষ ছিলেন। তার তিন সন্তান। চাষাবাদের পাশাপাশি কলার ব্যবসা করে সংসার চালাতেন। আজ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তার জানাজার নামাজ শেষে গ্রামের কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মো. আশরাফুজ্জামান আফরোজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার পরে পরিবারের সদস্যরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় সাপের কামড়ের শিকার জুলফিকারকে জরুরি বিভাগে নিয়ে আনেন। দুই ধাপে তার শরীরে ২০টি অ্যান্টিভেমন ইনজেকশন পুশ করা হয়। ভোরে তার মৃত্যু হয়।
সরকারিভাবে অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন সাপ্লাই না থাকার বিষয়ে জানতে চেয়ে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. এএসএম ফাতেহ আকরামের সঙ্গে একাধিক বার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
আফজালুল হক/আরকে