বরিশালে ৪১ দশমিক ১০ শতাংশ ভোটেও নৌকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা

বরিশাল জেলার ৬টি সংসদীয় আসনে ভোটে এগিয়ে থাকা প্রার্থীদের বেসরকারিভাবে বিজীয় ঘোষণা করা হয়েছে।
রোববার (৭ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম।
ঘোষিত ফল অনুসারে জেলায় চারটি আসনে নৌকা জয় পেয়েছে। বাকি দুটির মধ্যে একটিতে জাতীয় পার্টি, অপরটিতে আওয়ামী স্বতন্ত্র প্রার্থী জয় পায়। ফলে জেলায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীক।
বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনে মোট ১২৯টি কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ১ লাখ ৭৬ হাজার ৭৭৭ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের সেকেন্দার আলী পেয়েছেন ৪ হাজার ১২২ ভোট।
বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনে মোট ১৩৬টি কেন্দ্রে ১ লাখ ২১ হাজার ৩৭৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন নৌকা প্রতীক নিয়ে মহাজোট মনোনীত ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ নেতা ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে ফাইয়াজুল হক রাজু পেয়েছেন ৩১ হাজার ১৬২ ভোট।
বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে নৌকার মনোনীত প্রার্থী দেওয়া হয়নি। আসনটি শরিকদল জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয় ক্ষমতাশীনরা। এই আসনের মোট ১২৪টি কেন্দ্রে ৫১ হাজার ৮১০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের গোলাম কিবরিয়া টিপু। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আতিকুর রহমান পেয়েছেন ২৪ হাজার ১২৩ ভোট।
বরিশাল-৪ (মেহেন্দীগঞ্জ-হিজলা) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ড. শাম্মী আহম্মেদের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যাওয়ায় নৌকার কোনো প্রার্থী ছিল না। তবে আওয়ামী লীগ নেতা পঙ্কজ নাথ স্বতন্ত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ১৪৯টি আসনে ১ লাখ ৬১ হাজার ৪৬৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের মিজানুর রহমান পেয়েছেন ৭ হাজার ৬৭৫ ভোট।
বরিশাল-৫ (সদর) আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জাদিক ফারুক শামীম মোট ১৭৬টি কেন্দ্রে ৯৭ হাজার ৭০৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি বর্তমান সংসদের পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাউদ্দিন রিপন পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৩৭০ ভোট।
বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল হাফিজ মল্লিক ১১৩টি আসনের মধ্যে ৬০ হাজার ১০৯টি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী শামসুল আলম পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৩৭৪ ভোট।
ভোটের হার ৪১ দশমিক ১০ শতাংশ
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন বড় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে বরিশাল জেলায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলার ৬টি আসনে ৪১ দশমিক ১০ শতাংশ ভোট পড়েছে। এরমধ্যে বরিশাল-১ (গৌরনদী- আগৈলঝাড়া) আসনে ৬০ দশমিক ৫০ শতাংশ, বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনে ৪০ দশমিক ০৮, বরিশাল-৩ ( বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে ৩৪ দশমিক ৩৬, বরিশাল-৪ ( হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) আসনে ৪৩ দশমিক ৯৮, বরিশাল-৫ (সদর) আসনে ২৯ দশমিক ৮৮, বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) আসনে ৩৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
বরিশালের ছয়টি আসনে মোট ৩৫ জন প্রার্থী ভোটের মাঠে টিকে ছিলেন। তবে বরিশাল-২ আসনে মনিরুল ইসলাম নৌকাকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে যান। বরিশাল-২ ও ৫ আসনে জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপসও প্রহসনের নির্বাচন আখ্যা দিয়ে সরে দাঁড়ান। জেলায় মোট ভোটার ছিল ২১ লাখ ৩২ হাজার ৭৪ জন। তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য ৮২৭টি কেন্দ্র ছিল। নিছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলেও কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি ছিল একেবারেই নগণ্য।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এসএম