ফরিদপুর মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিতের নেপথ্যে দুই এমপি

ফরিদপুরে মোটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন স্থগিতে দুই এমপি (সংসদ সদস্য) কলকাঠি নেড়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন শ্রমিকনেতারা। গতকাল ফরিদপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন শ্রমিকনেতারা।
রাত ৮টার দিকে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুর মোটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের বর্তমান সভাপতি ও এ নির্বাচনের সভাপতি প্রার্থী জোবায়ের জাকির বলেন, এই ইউনিয়নকে ধ্বংস করার জন্য একটি কুচক্রী মহল মামলা দিয়ে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করেছে। ২০১৮ সালে এ ইউনিয়নের নির্বাচনের দিনও একই ষড়যন্ত্র করে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
জোবায়ের জাকির আরও অভিযোগ করেন, ফরিদপুরের সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য ঝর্না হাসান এ নির্বাচন বন্ধের জন্য ডিও লেটার দিয়েছিলেন। ফরিদপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য এ কে আজাদ এ নির্বাচন ঠেকাতে সিঙ্গাপুর থেকে উড়ে এসে বিভিন্ন দপ্তরে দৌঁড়ঝাপ করেছেন।
জোবায়ের জাকির সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, যাদের কাজ আইন প্রণয়ন করা তাদের কাছ থেকে বেআইনি কাজ প্রত্যাশা করা যায় না। আগামীতে এই দুই সংসদ সদস্যকে তাদের কৃতকর্মের জন্য জবাবদিহি করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুর মোটর ওয়ার্কাস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও এ নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী গোলাম মো. নাসির বলেন, আমরা ছোট মানুষ। ছোট ছোট নির্বাচন করি। চার লাখ লোকের এমপি হয়ে আমাদের এ শ্রমিক ইউনিয়নের সাত হাজার ভোটারের ওপর এ আচরণ তারা কিভাবে করতে পারলেন আমরা বুঝি না। নির্বাচনে আমরা অনেক পয়সা খরচ করে ফেলেছি। আমরাও তো জনগণ, আমরা তো ওই চার লাখের বাইরের কেউ নই। ওই দুই সংসদ সদস্য কোন কারণে, কী পাওয়ার আশায় আমাদের নির্বাচন বন্ধ করলেন তা আমাদের বুঝে আসে না।
আরও পড়ুন
এদিকে নির্বাচন বন্ধের সিদ্ধান্ত আসার পর গতকাল বিকেলে টায়ারে আগুন দিয়ে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা। পরে সন্ধ্যায় পরিবহন শ্রমিকরা ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসানের সাথেও সাক্ষাৎ করেন। সেখান থেকে আশানুরূপ সাড়া না পেয়ে রাতে সংবাদ সম্মেলন করেন শ্রমিকনেতারা।
তারা কীভাবে শ্রমিক নেতা হন?
শ্রমিক নেতাদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুরের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ঝর্না হাসান বলেন, মামলা কিংবা নির্বাচন স্থগিতের বিষয়টি আমার জানা নেই। এটি আমি করিওনি। এটা আমার কাজও না। এ ঘটনার সাথে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
তিনি আরও বলেন, এ নির্বাচন যাতে অবাধ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হয় তার জন্য গত ২০ মে আমি জেলা প্রশাসককে একটি ডিও লেটার দিয়েছিলাম। আজ যেসব শ্রমিক নেতারা আমাদের (দুই সংসদ সদস্য) দোষ দেন, যারা বড় বড় পদে আছেন তারা কীভাবে শ্রমিক নেতা হন? তারা কোন গাড়ি চালান? কোন গাড়ির সুপারভাইজার? কিংবা কোন গাড়ির হেলপার? বছরের পর বছর শ্রমিকদের ব্যবহার করে তারা নিজেদের আখের গুছিয়েছেন।
জহির হোসেন/এনএফ