যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

রাজবাড়ীর কালুখালীতে যৌতুকের জন্য ইট দিয়ে আঘাত করে স্ত্রী রাশিদা বেগমকে (২৫) হত্যার দায়ে স্বামী আব্দুল মন্ডলকে(৩০) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) বিকেলে রাজবাড়ী জেলা দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র বিচারক মোসাম্মৎ জাকিয়া পারভীন এ রায়ের আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আব্দুল মন্ডল কালুখালী উপজেলার মাঝবাড়ী ইউনিয়নের কোমরপুর গ্রামের মৃত নূরুল মন্ডলের ছেলে। আব্দুল মন্ডল ঢাকায় টাইলস মিস্ত্রির কাজ করতো। নিহত রাশিদা বেগম একই উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের মৃত জোনাব আলী শেখের মেয়ে।
আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, রাশিদা বেগম ও আব্দুল মন্ডল প্রেমের সম্পর্ক করে ১০/১২ বছর পূর্বে কোর্ট ম্যারিজ করে বিয়ে করে। তাদের ঘরে ২টি পুত্র সন্তান ও একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই আব্দুল মন্ডল তার স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণপোষণ ও খোঁজ খবর নিতেন না। এ কারণে রাশিদা বেগম তার সন্তানদের নিয়ে তার বাবার বাড়িতে চলে আসে। রাশিদা তার বাবার বাড়ির দেওয়া ১ বিঘা জমিতে বসবাস শুরু করে। সেই জমি বিক্রি করে নগদ টাকা দিয়ে বিদেশে যাওয়ার কথা বলে রাশিদার স্বামী। রাশিদা জমি বিক্রি করতে অস্বীকার করে। এই নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহ চলে আসছিল এবং রাশিদাকে মারধর করে হত্যা চেষ্টাও করেছিল তার স্বামী।
গত ২০২৩ সালের জুনের ৩ তারিখে আব্দুল মন্ডল ঢাকা থেকে বাড়িতে আসে। দুই দিন থাকার পর ৬ তারিখে রাতে তারা খাওয়াদাওয়া শেষ করে ঘুমিয়ে যায়। পরের দিন ৭ তারিখ ভোর সাড়ে ৬টার রশিদার ঘর বাইরে থেকে তালাবদ্ধ দেখা যায়।পরে আশেপাশের লোকজন এসে তালাবদ্ধ ঘর ভেঙে দেখে রাশিদার রক্তাক্ত মরদেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে আছে। পাশেই রক্তাক্ত অবস্থায় একটি পুরাতন ইট পড়ে ছিল। রাশিদার স্বামী পলাতক ছিল। পরে পুলিশকে খবর দিলে তার এসে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়। এ ঘটনার ওই দিনই রাশিদার বড় বোন বাদী হয়ে রাশিদার স্বামী আব্দুল মন্ডলকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
রাজবাড়ী আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) উজির আলী শেখ বলেন, স্ত্রী রাশিদা বেগমকেকে হত্যার দায়ে স্বামী আব্দুল মন্ডলকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ রায়ে বাদী পক্ষ ন্যায় বিচার পেয়েছে। এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।
মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/আরকে