ফেনীতে বাড়ছে মাছের উৎপাদন, তবুও দাম নাগালের বাইরে
ফেনীতে চাহিদার তুলনায় বেড়েছে মাছের উৎপাদন। তবুও সাধারণ মানুষ সরাসরি এর সুফল ভোগ করতে পারছে না। বাজারে মাছের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও দাম নিয়ন্ত্রণহীন। কয়েক মাস আগেও তেলাপিয়া-পাঙ্গাশ জাতীয় মাছে আমিষের চাহিদা মেটাতো নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষজন। কিন্তু দাম বাড়ায় এখন সেটিও তাদের সাধ্যের বাইরে চলে গেছে।
জেলা মৎস্য বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জেলায় ৩৮ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয়েছে। যা চাহিদার বিপরীতে ১ হাজার ৯২৬ মেট্রিক টন বেশি। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩৪ হাজার ৪২৮ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয়েছিল। সেই হিসেবে বছরে উৎপাদন বেড়েছে ৪ হাজার ১৭২ মেট্রিক টন।
মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা ৪৫ হাজার ৩৪৩টি পুকুর ও দীঘিতে মোট মাছ উৎপাদন হয়েছে ৩১ হাজার ৫৭৮ মেট্রিক টন। যা গতবছরের তুলনায় ৪ হাজার ২৬১ মেট্রিক টন বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া ১৮৯টি সরকারি পুকুর ও দিঘীতে মোট মাছ উৎপাদন হয়েছে ৯৮১ দশমিক ৮০ মেট্রিক টন।
সূত্র জানায়, জেলায় ২৪ হাজার ৯৬০ জন মৎস্যচাষি রয়েছেন। এছাড়া ৬ হাজার ২০৮ জন মৎস্যজীবী রয়েছেন। ৪৫টি মৎস্য আড়তের মাধ্যমে জেলায় মাছের বাজারজাত করা হয়। জেলাজুড়ে দৈনিক ও সাপ্তাহিক ১৫৭টি বাজারের মাধ্যমে মাছ বিক্রয় করা হয়।
রংপুর থেকে ফেনী শহরে এসে রিকশা চালান চল্লিশোর্ধ্ব সামছুল আলম। দুর্ভোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সপ্তাহে এক-দুইবার তেলাপিয়া নাইলে পাঙ্গাশ মাছ কিনতে পারতাম। সেগুলোর দামও এখন নাগালের বাইরে। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে বাজারে গিয়ে মাছের দিকে তাকাতে সাহস হয় না। অন্য মাছের কথা তো বাদই দিলাম।
অরূপ বণিক নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, শহরে প্রাইভেট পড়িয়ে মেস থেকে পড়ালেখা করছি। বছর ব্যবধানে মাসিক ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত খরচ বেড়ে গেছে। আগের তুলনায় বাজারে কেজিপ্রতি মাছভেদে ১০০-২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এভাবে চলা খুব কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, জেলায় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে ও মৎস্যখাতকে আরও সমৃদ্ধ করতে আমাদের নানা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। মাছ উৎপাদনে চাষি ও জেলেদের নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা, পরামর্শ প্রদান, বিভিন্ন সভা-সেমিনার আয়োজন করার মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করা হবে।
তিনি বলেন, মাছ উৎপাদনে জেলার মধ্যে সোনাগাজী উপজেলা এগিয়ে রয়েছে। অন্যান্য উপজেলাগুলোতে মাছ চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করা হবে। উৎপাদন বাড়লে দামেও কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
তারেক চৌধুরী/আরকে