‘নারায়ে তাকবির’ স্লোগান দিয়ে র্যাব-পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেটকে অবরুদ্ধ
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ অভিযানে গিয়ে বাধার মুখে ফের যেতে হয়েছে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের। তিন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে র্যাব ও পুলিশসহ ৬০ জনের দলটিকে ‘নারায়ে তাকবির’ স্লোগান দিয়ে ঘেরাও করেন ভাটার মালিক ও শ্রমিকরা। প্রায় আড়াই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয় তাদের। পরে ভাটার মালিকদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে চলে যেতে বাধ্য হন কর্মকর্তারা।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে চরসাদিপুর ইউনিয়নের ভোমরার মোড়ে ঘটে এ ঘটনা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, পদ্মা নদীর তীর ঘেঁষে ২২ বর্গমাইল আয়তনের চরসাদিপুর ইউনিয়ন। এখানে বসবাস করেন প্রায় ২৩ হাজার মানুষ। আইন অমান্য করে এই ইউনিয়নের ফসলি জমিতে গড়ে উঠেছে ৩৩টি অবৈধ ইটভাটা। এর মধ্যে অন্তত ১৯টিতে রয়েছে টিনের তৈরি ড্রাম চিমনি। এ ইউনিয়ন ঘেঁষে কুষ্টিয়া সদর ও পাবনা সদর ইউনিয়নের অংশেও পড়েছে আরও অন্তত সাতটি অবৈধ ভাটা। এসব ভাটায় পোড়ানো হচ্ছে নদী ও ফসলি জমির মাটি; আশপাশের গাছের কাঠ। ইট বহনে ব্যবহৃত ট্রাকের কারণে ভেঙে পড়ছে গ্রামীণ সড়ক। দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।
আরও পড়ুন
প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চরসাদিপুর চরাঞ্চলটি দুর্গম। যে কারণে অতীতে অবৈধ ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালানো যায়নি। বুধবার কুষ্টিয়া সদর, কুমারখালী, পাবনা সদর ও কুষ্টিয়া পরিবেশ অধিদপ্তর যৌথভাবে অভিযানে যায়। বেলা ১১টার দিকে দলটি ভোমরার মোড়ে পৌঁছলে ‘নারায়ে তাকবির’ স্লোগান দিয়ে ভাটার মালিক ও শ্রমিকদের নেতৃত্বে লোকজন তাদের ঘেরাও করেন।
কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন- কুষ্টিয়া সদরের এসিল্যান্ড রিফাতুল ইসলাম, কুমারখালীর এসিল্যান্ড মো. আমিরুল আরাফাত, পাবনা সদরের এসিল্যান্ড মুরাদ হোসেন ও কুষ্টিয়া পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) হাবিবুল বাসার।
ওই এলাকায় এবিসি নামে ইটভাটাটি অবৈধভাবে নির্মাণ করেন সাখাওয়াত হোসেন। বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, ব্যাংক ঋণ ও ধারদেনা করে ভাটা চালাচ্ছি। আশপাশের এলাকায় এমন অন্তত ৪০টি অবৈধ ভাটা রয়েছে। যার অন্তত ১৯টিতে ড্রাম চিমনি। কয়েক হাজার শ্রমিক ভাটাগুলোতে কাজ করেন। তাদের জীবিকার কথা চিন্তা করে সম্মিলিতভাবেই অভিযানে বাধা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কুমারখালীর এসিল্যান্ড আমিরুল আরাফাত বলেন, ভাটার মালিক ও শ্রমিকরা পথেই অভিযান আটকে দিয়েছেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়েও ভাটায় পৌঁছানো যায়নি। জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে আইন প্রয়োগ করা সম্ভব হয়নি।
ইউএনও এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ব্যক্তিদের তালিকা করা হয়েছে। আরও গুছিয়ে ভবিষ্যতে সেখানে অভিযান চালানো হবে।
রাজু আহমেদ/এমএসএ