শ্রীনগর থানা থেকে যুবদল কর্মীকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মামলা

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থানা হাজত থেকে যুবদল নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের আরও ১৭০ জনকে অজ্ঞাতনামা করে মোট ২০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। শনিবার (১১ জানুয়ারি) বেলা দেড়টার দিকে শ্রীনগর থানার উপপরিদর্শক আবদুর রাজ্জাক বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাইয়ুম উদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, মামলায় উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন মৃধা, সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক এমদাদুল হক, ছাত্রদলের সভাপতি আশরাফুল ইসলামসহ ৩১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের আরও ১৬০ থেকে ১৭০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদেরকে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (শ্রীনগর সার্কেল) আনিসুর রহমান বলেন, ওই ঘটনায় শ্রীনগর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। ছিনিয়ে নেওয়া আসামিকে ধরতে আমরা গতকাল রাত থেকে অভিযান পরিচালনা করছি। কিন্তু আমাদের ভাগ্য খারাপ হওয়ায় আমরা এখনো তাকে ধরতে পারিনি। নতুন মামলায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কাউকে একবিন্দু ছাড়া দেওয়ার সুযোগ নেই। এটা আমাদের অস্তিত্বের লড়াই। আসামিদের ধরতে আমাদের অভিযান চলছে। খুব শক্তভাবে অভিযান পরিচালানা করবো আমরা।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে এজাহারভুক্ত আসামি শ্রীনগর উপজেলা যুবদলের সদস্য তরিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে শ্রীনগর থানা পুলিশ। এ খবরে রাত দশটার দিকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা থানা থেকে যুবদল নেতাকে ছিনিয়ে নেয়।
পুলিশ ও থানা সূত্রে জানা যায়, একটি মারামারির ঘটনায় গত ১৯ নভেম্বর শ্রীনগর থানায় একটি মামলা হয়। মামলার এজাহারভুক্ত আসামি তরিকুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে থানা হাজতে রাখে। ওই সময় তরিকুলকে ছাড়িয়ে নিতে প্রথমে থানায় আসেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল ইসলাম খান, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন মৃধা, সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক এমদাদুল হক, ছাত্রদলের সভাপতি আশরাফুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন। তারা তরিকুলকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য পুলিশকে বিভিন্নভাবে চাপ দিতে থাকেন। পুলিশ রাজি না হলে হাফিজুল ইসলাম খান সন্ধ্যা সাতটার দিকে অন্য নেতা-কর্মীদের থানায় রেখে বেরিয়ে যান। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, কিছুক্ষণ পর বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় ২০০ নেতা-কর্মী থানা প্রাঙ্গণে জড়ো হন। সেখানে তারা বিক্ষোভ করতে থাকেন। সেখানে পুলিশের সঙ্গে তারা বাকবিতণ্ডা শুরু করেন। একপর্যায়ে রাত ১০টার দিকে তারা জোর করে ওসি ও সার্কেল এসপির সামনে থেকে আসামি তরিকুলকে ছিনিয়ে নিয়ে যান।