৮ বছর পর প্রবাস থেকে ফিরে দেখেন আড়ায় ঝুলছে স্ত্রীর মরদেহ

ইরাকে প্রায় সাড়ে আট বছর প্রবাস জীবন কাটিয়ে বাড়িতে ফেরেন রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পূর্ব তেনাপচা গ্রামের আলামিন মন্ডল। কিন্তু বাড়িতে ফিরে দেখেন নিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলছে স্ত্রী পপি বেগমের (৩০) মরদেহ।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের পূর্ব তেনাপচা গ্রামের প্রবাসী আলামিনের ঘর থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রবাসী আলামিন মন্ডলের ছোট ভাই নয়ন মন্ডল জানান, প্রায় সাড়ে আট বছর পর ইরাক থেকে দেশে ফেরেন তার বড় ভাই আলামিন মন্ডল। তাকে আনতে গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে আলামিনের ছেলে আদিব মন্ডল, মা-চাচিসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বিমানবন্দরে যান। এ সময় আলামিনের নানি এবং স্ত্রী পপি বেগম বাড়িতে ছিলেন। আজ দুপুর ১২টার দিকে আলামিনকে বহনকারী মাইক্রোবাস বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায়। এ সময় তিন বছর আগে মারা যাওয়া বাবার কবর জিয়ারত করেন আলামিন।
তিনি আরও জানান, কবর জিয়ারত শেষে আলামিন তার স্ত্রীকে দেখতে ঘরের দিকে ছুটেন। তার আগে ছেলে আদিব মন্ডল ডাকাডাকি করতে থাকলেও পপি বেগমের সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। ঘরের চারপাশ উঁকি দেওয়ার পর ঘরের ভেতরে একটি কক্ষের আড়ার সঙ্গে মায়ের মরদেহ ঝুলতে দেখে চিৎকার দেয় আদিব। এরপর লোহার শাবল দিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে আলামিন এই দৃশ্য দেখে আহাজারি শুরু করেন। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যায় গোয়ালন্দ ঘাট থানার পুলিশ।
গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্যমতে দীর্ঘদিন পর আলামিন ইরাক থেকে দেশে ফিরে এসেছেন। তাকে আনতে পরিবারের সদস্যরা বিমানবন্দরে গেলেও আলামিনের স্ত্রী পপি বেগমকে সঙ্গে নেননি। ধারণা করা হচ্ছে, এ অভিমানে গৃহবধূ পপি বেগম আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ মরদেহের সুরতহাল তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/এমজেইউ