বৃষ্টির পানি জমে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজট

সোমবার (৩১ মে) রাতের ভারী বর্ষণে গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে পানি জমে অসহনীয় যানজট সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভোগড়া বাইপাস ও টঙ্গী এলাকায় সড়কের ওপর এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার মেহেদী হাসান বলেন, সোমবার রাতে ভারী বৃষ্টির কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে যানবাহনগুলো স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারছে না। এতে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে প্রায় ৪-৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পর্যন্ত যানজট রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরেও যানজট ছিল। বিআরটি প্রকল্পের কর্মকর্তাদের ওই পানি সরানোর বিষয়ে একাধিকবার অনুরোধ করা হলেও তারা কাজ শুরু করেন বিলম্বে। ফলে সড়ক-মহাসড়ক থেকে দুপুরেও পানি নামেনি। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়নি।
এছাড়াও উত্তরা আব্দুল্লাহপুর থেকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত বিআরটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে। এ কাজ করার কারণে মহাসড়কের স্থানে স্থানে ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। আর এসব গর্তে পানি জমে জলাবদ্ধতার কারণেই গাড়ি স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারছে না। ফলে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তারা যানজট নিরসনের চেষ্টা করছেন।
গাজীপুর পরিবহনের যাত্রী আনোয়ার হোসেন জানান, গাজীপুরের শিমুলতলী যাওয়ার জন্য মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তিনি টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকা থেকে বাসে ওঠেন। কিন্তু সাড়ে ৯টার দিকে তিনি মহাসড়কের বড়বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছেন। অবস্থা স্বাভাবিক থাকলে এ রাস্তা পেরুতে ১০মিনিটও লাগার কথা নয়। টঙ্গী স্টেশন রোডসহ গাজীপুরের চান্দনা-চৌরাস্তা পর্যন্ত পুরো রাস্তার ওপরই কম-বেশি পানি রয়েছে। এ পানি পেরিয়ে কখন বাস যে গন্তব্যে পৌঁছাবে তা বলতে পারছি না।
গাজীপুর থেকে ঢাকাগামী বলাকা পরিবহনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চালক জানান, গত কয়েক বছর ধরে বিআরটি প্রকল্পের আওতায় গাজীপুরের ড্রেন ও সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে। এখনও ড্রেনের কাজই শেষ করতে পারেনি। এ ছাড়া ফ্লাইওভার, ব্রিজ নির্মাণ কাজও চলছে একই তালে। এতে ঢাকা-গাজীপুর সড়কের শিববাড়ি থেকে টঙ্গী পর্যন্ত সড়ক-মহাসড়কে অনেক গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলেই যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হয়। যাত্রীরাও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। যেন দেখার কেউ নেই।
মোহনা টিভির গাজীপুর প্রতিনিধি আতিকুর রহমান জানান, মহাসড়কে বৃষ্টির পানির কারণে সৃষ্ট যানজটে পড়ে তিনিও তেলিপাড়া থেকে চান্দনা-চৌরাস্তা পর্যন্ত পাঁচ মিনিটের রাস্তা প্রায় এক ঘণ্টায় অতিক্রম করেন।
গাজীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাব ডিভিশনাল অ্যাসিস্টেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. জামিল আক্তার লিমন বলেন, উল্লেখিত সড়ক-মহাসড়কে বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলছে। আমাদের লোকজন সকাল থেকেই তাদের সঙ্গে রাস্তার পানি সরানোর কাজে নিয়োজিত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিআরটি প্রকল্পের ড্রেনের কাজ সিংহভাগই শেষ হয়ে গেছে। যতটুকু বাকি আছে তা দিয়ে পানি সরানো সম্ভব হচ্ছে না বলে বৃষ্টি হলে রাস্তা ও রাস্তার পাশে পানি জমে যাচ্ছে।
বিআরটি প্রকল্পে কর্মরত প্রকৌশলী মোস্তফা মুন্সি বলেন, সাইনবোর্ড থেকে চান্দনা-চৌরাস্তা পর্যন্ত এলাকার পানি অপসারণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকায় ভারী বৃষ্টি হলেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাড়কে সাইনবোর্ড থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত রাস্তায় পানি জমে যায়। সাইনবোর্ড থেকে গাজীপুর নগরীর শিববাড়ি পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশেই পাইপ বাসানোর কাজ শেষ হয়ে গেছে। বাকি কাজ আগামী ১৫ জুনের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করছি। তখন আর এ এলাকায় পানি জমবে না। মঙ্গলবার সকাল থেকে বৃষ্টির পানি সরানোর কাজ করছে। শিগগিরই মহাসড়ক পানিমুক্ত হয়ে যাবাহন চলাচল স্বাভাবিক হবে।
শিহাব খান/আরএআর