রাজবাড়ীতে ৩৭৪ আসামির ১১৮ জন জামিনে, কারাগারে ৪৩

রাজবাড়ী জেলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলার ঘটনায় গুলিবর্ষণ ও বিস্ফোরক আইনে মোট পাঁচটি মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে রাজবাড়ী সদর থানায় চারটি ও গোয়ালন্দ ঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। এসব মামলায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অঙ্গসংগঠনের ৩৭৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।
জানা গেছে, সারা দেশের ন্যায় রাজবাড়ীতেও শিক্ষার্থীরা তাদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেন, রাজপথে নামেন। আন্দোলনে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা করেন। এ ঘটনায় রাজবাড়ী সদর থানায় দায়ের হওয়া চারটি মামলায় এজাহারে মোট ৩১৫ জনকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে বর্তমানে জামিনে রয়েছেন ১০৪ জন এবং জেলহাজতে রয়েছেন ৩৯ জন। এ ছাড়া গোয়ালন্দ ঘাট থানার মামলায় এজাহারনামীয় আসামি ৫৯ জন। এর মধ্যে জামিনে আছেন ১৪ জন, আর জেলহাজতে চারজন।
পুলিশে সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় হামলার ঘটনায় গত বছরের ৩০ আগস্ট শিক্ষার্থী রাজিব মোল্লা বাদী হয়ে সদর থানায় ১৭০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৩০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় এজাহারনামীয় ১৭০ জন আসামির মধ্যে বর্তমানে গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে রয়েছেন ৩৪ জন এবং জেলহাজতে ৩২ জন।
এ ছাড়া গত বছরের ২ অক্টোবর সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের ব্রাকপাড়া গ্রামের মো. ইদ্রিস ফকিরের ছেলে মো. শাহিন ফকির (৩৮) বাদী হয়ে সদর থানায় ৮৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১৫০/২০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার এজাহারনামীয় ৮৭ আসামির মধ্যে বর্তমানে জামিনে রয়েছেন ৫১ জন এবং জেলহাজতে রয়েছেন তিনজন।
অন্যদিকে গত বছরের ২৬ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী উৎস সরকার বাদী হয়ে ৪৪ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় এজাহারনামীয় ৪৪ জন আসামির মধ্যে বর্তমানে জামিনে রয়েছেন পাঁচজন এবং জেলহাজতে রয়েছেন একজন।
অপরদিকে গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থী জিসান খান বাদী হয়ে ১৪ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৫০/৬০ জনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় এজাহারনামীয় ১৪ জন আসামির মধ্যে বর্তমানে জামিনে রয়েছেন ১৪ জন এবং জেলহাজতে রয়েছেন চারজন।
এ ছাড়া গত বছরের ৪ আগস্ট গোয়ালন্দ রেলগেটে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে ২০২৪ সালের ১০ ডিসেম্বর গোয়ালন্দ ঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৫৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় এজাহারনামীয় ৫৯ জন আসামির মধ্যে বর্তমানে জামিনে রয়েছেন ১৪ জন এবং জেলহাজতে রয়েছেন তিনজন।
রাজবাড়ীর কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় গুলিবর্ষণ ও বিস্ফোরক আইনে রাজবাড়ী সদর থানায় চারটি ও গোয়ালন্দ ঘাট থানায় একটি মামলা হয়েছে। এই পাঁচটি মামলায় মোট এজাহারনামীয় আসামি ৩৭৪ জন। এর মধ্যে বর্তমানে জামিনে রয়েছেন ১১৮ জন এবং কারাগারে রয়েছেন ৪৩ জন।
মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/এমজেইউ