নাটোরে নেই পর্যাপ্ত আইসিইউ ও অক্সিজেন সেবা

নাটোর সরকারি বা বেসরকারি কোনো হাসপাতালেই করোনা রোগীদের চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। সদর হাসপাতালে ৩১ আসনের করোনা ইউনিট থাকলেও সম্প্রতি রোগী বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে আসনসংখ্যার অতিরিক্ত রোগীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।
সরকারি বা বেসরকারি কোনো হাসপাতালেই কোভিড ডেডিকেটেড রোগীর জন্য নেই আইসিইউ বা সিসিইউ সেবা। এমনকি করোনা রোগীদের জন্য যা সবচেয়ে জরুরি, সেই অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থাও নাজুক। হাইফ্লো অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা নেই কোনো হাসপাতালে। সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট নির্মাণের কথা বলা হলেও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি এখন পর্যন্ত।
তবে নাটোর সদর হাসপাতাল, সিংড়া উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্স এবং বড়াইগ্রাম উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাগানো হয়েছে বলে স্বাস্থ্য বিভাগ প্রচার করলেও তা সিলিন্ডারের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে। যার সর্বোচ্চ সক্ষমতা ১৫ লিটার।
নাটোর সদর হাসপাতালে ১৬টি বড় সিলিন্ডারে (৬ দশমিক ৮ কেজি) অক্সিজেন সরবরাহ চালু করা হয়েছে। যার মাধ্যমে বেডে অক্সিজেন সবরাহ করা যায়। নাটোর সদর হাসপাতালে কোনো সেন্ট্রাল অক্সিজেন বা হাইফ্লো অক্সিজেন চালু হয়নি।
নাটোরে ২০১৪ সাল থেকে ২৫০ বেডের নতুন হাসপাতালের নির্মাণকাজ চলছে, যা এখনো শেষ হয়নি। বস্তুত নাটোরে করোনার চিকিৎসা দেয়ার মতো কোনো প্রকার সুযোগ-সুবিধা নেই বললেই চলে।
এদিকে নাটোরে করোনা পরীক্ষার পিসিআর মেশিন নেই। এই জেলায় করোনার পরীক্ষা হচ্ছে জিন এক্সপার্ট মেশিন এবং র্যাপিড এন্টিজেন্ট পদ্ধতিতে। এসব নিয়ে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে সাধারণ মানুষের মাঝে। নাটোর রেডজোনে অবস্থান করলেও লকডাউন না দিয়ে করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়ে মাঠে নেমেছে পুলিশসহ জেলা প্রশাসন।
শহরের কাঁচা বাজার এবং আমের বাজার তেবাড়িয়া হাট এলাকায় স্থানান্তরসহ করোনার সংক্রমিত এলাকায় কঠোর নজরদারিতে রয়েছে বলে জানানো হয় জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে।
সিভিল সার্জন ডা. কাজী মিজানুর রহমান জানান, হাসপাতালের নতুন ভবনে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। ভবন নির্মাণসহ প্লান্ট স্থাপনের কাজ দ্রুত শেষ করার তাগাদা দেওয়া হয়েছে। আগামী ৫ জুন ভবনটি সম্পূর্ণ না হলেও কিছু অংশ (দুটি ফ্লোর) হস্তান্তরের কথা রয়েছে। সেখানেই নন-কোভিড রোগীদের স্থানান্তর করা হবে। এ ছাড়া দক্ষ জনবলসহ পিসিআর মেসিনের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ বলেন, নাটোর স্বাস্থ্য বিভাগকে সব ধরনের সহায়তা করতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। এই সংকট মুহূর্তে সরকারিভাবে দক্ষ জনবলের বরাদ্দ না পাওয়া গেলে বাহির থেকে নিয়ে কাজ করতে হবে। পিসিআর মেসিন চালানোর জন্য অস্থায়ীভাবে যে সহায়তা দরকার জেলা প্রশাসন থেকে তা পূরণ করা হবে।
তিনি বলেন, সিভিল সার্জনকে দ্রুত পিসিআর মেসিন বরাদ্দের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে মাননীয় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী (জুনাইদ আহমেদ পলক) সিভিল সার্জনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
তাপস কুমার/এনএ