শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে সারাদেশে মানববন্ধন

শিক্ষাব্যবস্থাকে রক্ষা করা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা, শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ শিক্ষাজীবন রক্ষার দাবি জানিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সারাদেশের বিভিন্ন জেলায় মানববন্ধন করেছে। ঢাকা পোস্টের জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (৩ জুন) দিনের বিভিন্ন সময়ে এসব কর্মসূচি পালিত হয়।
ভোলা
ভোলায় শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ শিক্ষাজীবন রক্ষার্থে স্বাস্থ্যসুরক্ষা নিশ্চিত করে অবিলম্বে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ভোলা জেলা উত্তর শাখার উদ্যোগে ভোলা প্রেসক্লাব চত্বরে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
ভোলা জেলা উত্তর শাখার সহসভাপতি মাওলানা আতাউর রহমান মোমতাজী বলেন, দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত। দেশের অন্য সবকিছু খোলা থাকলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ফলে আমরা হতাশায় ভুগছি। মহামারি করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। শিক্ষার সঙ্গে জড়িত সবকিছুতেই বিপর্যয় নেমে এসেছে।

তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার একাধিক তারিখ দিলেও তা খুলছে না। এতে শিক্ষার্থীরা নানান ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ছে। তাই আমরা চাই অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হোক।
সহসাংগঠিক মাওলানা ইউনুছ আদনান সঞ্চালয়ান মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সহসভাপতি তাজউদ্দীন ফারুকী, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তরিকুল ইসলাম, সহসাধারণ সম্পাদক আবদুল মমিন, দফতর সম্পাদক হাফেজ মাওলানা মাহমুদল হাসান প্রমুখ।
সুনামগঞ্জ
শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ শিক্ষাজীবন রক্ষার্থে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সুনামগঞ্জ জেলা শাখা। বৃহস্পতিবার শহরের আলফাত স্কয়ারে বেলা সাড়ে ১১টায় এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা শহীদুল ইসলাম পলাশ বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে সরকার। অথচ পরিবহন, দোকানপাট, গার্মেন্টসসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। করোনা এতই ভদ্র হয়ে গেল পরিবহনে যায় না, গামের্ন্টসে যায় না। শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাবে, এটা আমরা বিশ্বাস করি না।
তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে যুবসমাজ নষ্ট হচ্ছে। মেরুদণ্ড যদি নষ্ট হয়ে যায়, সে মানুষ সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। ঠিক তেমনি শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। সেই শিক্ষাই যদি নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে পুরো জাতি নষ্ট হয়ে যাবে। আজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে ছেলে-মেয়েরা অবৈধ প্রেমে লিপ্ত হচ্ছে। মোবাইলে গেম খেলা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাচ্ছে। মানববন্ধনে দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানান বক্তারা।

সাধারণ সম্পাদক মাওলানা সোলেহ আহমদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের স সভাপতি ক্বারী মহিবুল হক আজাদ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. রহমত উল্লাহ, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মুফতি এহসানুল হক, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের জেলা শাখার সভাপতি মো. জিলাই মিয়া জিলানী, ইসলামী যুব আন্দোলনের জেলা শাখার সভাপতি তানভির আহমদ তাছলিম ও ইশা ছাত্র আন্দোলনের জেলা শাখার সভাপতি মো. মাছুম আহমদ প্রমুখ।
পটুয়াখালী
স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে মানববন্ধন করেছে পটুয়াখালী ইসলামী আন্দোলন। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সামনে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। তবে মানববন্ধনে কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জেলা সেক্রেটারি আর আই এম অহিদুজ্জামান বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আমাদের সন্তানদের কী অবস্থা, তা আপনারাও অবগত আছেন। সরকারের উচিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবিলম্বে প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া। আজ পীর সাহেব চরমোনাই দেশব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। আমরা তাই রাজপথে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি খোলা না হয়, তবে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

এ সময় আর আই এম অহিদুজ্জামানের সঞ্চালনায় ও ইশার সভাপতি মুফতি হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন মাওলানা কাজী গোলাম সরোয়ার, মুহাম্মদ সেলিম মিয়া, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, অধ্যক্ষ মাওলানা নাজমুল হুদা, অধ্যক্ষ মাওলানা মহিউদ্দিন শিকদার, মাওলানা আবুল হাসান বোখারী, মাস্টার আব্দুল হাকিম, মাওলানা নজরুল ইসলাম, মাস্টার সিদ্দিকুর রহমান, অধ্যাপক হাফিজুর রহমান, হাফেজ মাওলানা ফেরদৌস খান, মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম খান প্রমুখ।
সাভার
শিক্ষাব্যবস্থাকে রক্ষা করতে অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা জেলা উত্তর শাখা। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সাভার বাসস্ট্যান্ডে সিটি সেন্টার শপিং মলের সামনে এক মানববন্ধনে এই দাবি জানান তারা।
সাভারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা জেলা উত্তরের সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, করোনা মহামারিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। শিক্ষার সঙ্গে জড়িত সবকিছুতেই বিপর্যয় নেমে এসেছে। ১৬ মাস ধরে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। মাঝখানে কিছুদিন কওমি মাদরাসা চালু থাকলেও আবারও তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আলিয়া মাদরাসাও খোলেনি।

তিনি বলেন, স্কুল, কলেজ ও আলিয়া মাদরাসার সব পরীক্ষা বন্ধ। গত বছরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের অটো পাস দেওয়া হয়েছে। এ বছরের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা এখনো হয়নি। পরীক্ষা হবে কি না, তাও জানানো হয়নি। শিক্ষার্থীরা পড়ার টেবিল ছেড়ে এবারও অটো পাসের অপেক্ষায়। তাই অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
প্রচার সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান সোহাগ বলেন, শিক্ষামন্ত্রী বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য অভিভাবকদের কোনো চাপ নেই। তার এ বক্তব্যে প্রমাণ করে দেশের সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরকারের মন্ত্রী-আমলাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন জেলা সহসভাপতি মো. ইউনুছ আলী, জেলা সহসভাপতি আবদুল মান্নান, যুগ্ম সম্পাদক মুফতি মঈনুদ্দিন, সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মো. আনিসুর রহমান, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা বিল্লাল হোসাইন, ঢাকা জেলা উত্তর ইসলামী যুব আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা লিয়াকত হোসেন জিহাদী, ঢাকা জেলা উত্তরের ইশা ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি মো. সাব্বির হোসাইন প্রমুখ।
এনএ