রসে ভরা পাহাড়ের জলডুবি আনারস

শেরপুরের গারো পাহাড়ে কৃষিতে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করেছে আনারস চাষ। বন্য হাতির আক্রমণে ধানসহ অন্যান্য ফসলের বারবার ক্ষতির মুখে পড়ে পাহাড়ি এলাকার কৃষকরা বিকল্প পথ খুঁজতে গিয়ে এখন ঝুঁকছেন আনারস চাষে। আর জলডুবি জাতের এ আনারস রসালো ও সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে এ আনারস এখন দেশের বিভিন্ন জেলাতেও রপ্তানি হচ্ছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলার পশ্চিম বাকাকুড়া গ্রামের কৃষক জমশন ম্রং জানান, তিনি চট্টগ্রাম থেকে ২০ হাজার আনারসের চারা এনে রোপণ করেছেন। এতে খরচ হয়েছে প্রায় দুই লাখ টাকা। তিনি আশাবাদী, এবার দ্বিগুণ লাভ হবে এবং ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে চাষাবাদ করবেন।

একই এলাকার কৃষি উদ্যোক্তা আশরাফুল আলম জানান, তিনি আট একর জমিতে দ্বিতীয়বারের মতো আনারস চাষ করছেন। এবার প্রায় দুই লাখ চারা রোপণ করেছেন আর এতে খরচ হয়েছে প্রায় ১৬ লাখ টাকা। ধান বা অন্যান্য ফসল বন্য হাতির আক্রমণে ধ্বংস হয়ে যায়, কিন্তু আনারস তুলনামূলকভাবে নিরাপদ ও লাভজনক। গতবারের মতো এবারও ভালো মুনাফার প্রত্যাশা করছেন।
চাষি সুব্রত বলেন, গত দুই বছর ধরে জলডুবি জাতের আনারস চাষ করছি। আগেরবার ভালো ফলন পেয়েছি, এবারও সেই আশা করছি। আনারস চাষে কৃষক ছাড়াও বহু শ্রমিক কাজের সুযোগ পেয়েছেন যা এলাকায় নতুনভাবে কর্মসংস্থানের পথ খুলে দিয়েছে।

শেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মুহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, এই অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া আনারস চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। ঝিনাইগাতীর সফলতা দেখে এখন নালিতাবাড়ী এবং শ্রীবরদীতেও এই চাষ ছড়িয়ে পড়ছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বৃদ্ধি এবং বন্য হাতির আক্রমণ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে এই অঞ্চল শিগগিরই দেশের অন্যতম প্রধান আনারস উৎপাদন অঞ্চলে রূপ নিতে পারে।
মো. নাইমুর রহমান তালুকদার/এমজেইউ