বাবার বন্ধুর হাতে শ্লীলতাহানির পর কিশোরীর আত্মহত্যা

চুয়াডাঙ্গায় বাবার বন্ধুর হাতে শ্লীলতাহানির পর এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার (০৩ জুন) দিবাগত রাতে সদর উপজেলার মাখালডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে আলামত জব্দ করে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
স্থানীয়রা জানান, রাতে এলাকায় সাধুসঙ্গের আয়োজনে বাউল গান চলছিল। ওই কিশোরীর বাবার বন্ধু কুষ্টিয়ার মিরপুর থানার হালসা নওদাপাড়ার মৃত জামালের ছেলে লোকমান গানের আসরে অংশ নেন। রাত ৩টার দিকে মা-বাবা ঘরে না থাকার সুযোগে ওই কিশোরীর সঙ্গে ধস্তাধস্তি করেন লোকমান। বিষয়টি এক প্রতিবেশী দেখে ফেলেন। তিনি ওই কিশোরীর মাকে গানের আসর থেকে ডেকে নিয়ে আসেন। তারা বাড়িতে এসে গোয়ালঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় মেয়েটিকে দেখতে পান। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করলে সকাল ৭টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পর অভিযুক্ত লোকমান পালিয়ে যান।
এদিকে লোকমানের বিচার দাবিতে এলাকার লোকজন ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন। অবিলম্বে তাকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
প্রতিবেশী মাছ ব্যবসায়ী আনারুল ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাত ৩টার দিকে গানের আসর থেকে বাড়ি ফেরার পথে ঘরের বারান্দায় লোকমানের সঙ্গে ওই কিশোরীর ধস্তাধস্তি দেখতে পাই। পরে তার মাকে ডেকে নিয়ে বাড়িতে আসি। এ সময় গোয়ালঘরে ওই কিশোরীকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই। পাঁচদিন আগেও ওই কিশোরীর হাত ধরে টানাটানি করা অবস্থায় লোকমানকে স্থানীয় কয়েকজন দেখে তার মামাকে বিষয়টি জানায়।
ওই কিশোরীর মা বলেন, আমি রাতে গানের আসরে ছিলাম। আমার স্বামী দোকানদারি করছিলেন। আমার মেয়েকে একা পেয়ে লোকমান জড়িয়ে ধরে ধস্তাধস্তি করে বলে জানায় প্রতিবেশী আনারুল। আমি দ্রুত বাড়ি ফিরে মেয়েকে খোঁজাখুজির একপর্যায়ে দেখি গোয়ালঘরের বাঁশের সঙ্গে গলায় ওড়না দিয়ে ঝুলে আছে। পরে চেঁচামেচি করলে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে মেয়েকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করলে দ্রুত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। সকালে আমার মেয়ে মারা যায়।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাবার বন্ধু লোকমানের অসংলগ্ন আচরণে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কিছু আলামত জব্দ করেছি। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত লোকমান পলাতক রয়েছেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
আফজালুল হক/আরএআর