শেরপুরে ভাঙনের মুখে মহারশি নদীর পাড়, স্থানীয়দের উদ্বেগ

ভারতের মেঘালয় ও আসামে টানা ভারি বর্ষণ এবং শেরপুরে গত চার দিনের থেমে থেমে বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার নদ-নদীর পানি বাড়ছে। এর প্রভাবে ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি নদীর পানি (২০ মে) মঙ্গলবার সকাল থেকে বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে।
পানি বৃদ্ধির ফলে ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়নের দীঘিরপাড় ফাজিল মাদরাসা এলাকায় মহারশি নদীর পাড় ভাঙার উপক্রম হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তারা প্রশাসনকে বারবার অবহিত করলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
আজ সকালে পানি বৃদ্ধির কারণে নদীর পাড় ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম রাসেল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। তবে জনবল সংকটের কারণে স্থানীয় বাসিন্দারাও বাঁধ রক্ষার কাজে অংশ নিচ্ছেন।
দীঘিরপাড় এলাকার বাসিন্দা এমদাদ মোল্লা বলেন, গত তিন বছর ধরে এই এলাকায় ভাঙনের মুখে পড়লেও প্রশাসনের তেমন নজরদারি নেই। যখন পানি আসে, তখন তারা কিছুটা কাজ করে। এই বাঁধ ভেঙে গেলে আশপাশের সব বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে যাবে। দীঘিরপাড় ফাজিল মাদরাসা ঝুঁকিতে রয়েছে। আমরা এখন টেনশনে আছি। আজ রাতে উজানে বৃষ্টি হলে এই বাঁধ আটকানো কোনোভাবেই সম্ভব না। আশপাশের সব কিছু ভেসে যাবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির জন্য আমাদের আজ ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হচ্ছে। যেখানে সবার আগে বাঁধ প্রয়োজন, সেখানে বাঁধ না করে অন্য জায়গায় করেছে।

ঝিনাইগাতী উপজেলার স্বেচ্ছাসেবক আতিক বলেন, আমরা প্রতি বছর এই বাঁধ সংস্কারের জন্য কাজ করি। যখনই পানি আসে, তখনই আমাদের এই বাঁধে মাটি ফেলে কাজ করতে হয়। এই বাঁধের স্থানীয় একটা সমাধান প্রয়োজন, নয়তো বাঁধের পাশে দীঘিরপাড় ফাজিল মাদরাসাটিও ভেসে যাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, এখন পর্যন্ত সব কিছু স্বাভাবিক রয়েছে। মহারশি নদীর দীঘিরপাড় ফাজিল মাদরাসা এলাকায় যে বাঁধটি রয়েছে, সেখানে কিছুটা ভাঙন দেখা দিলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। যাতে করে বড় ধরনের কোনো ক্ষতি না হয়, সেজন্য আমরা সব সময় তৎপর রয়েছি। সকালে আমি বাঁধটি পরিদর্শন করেছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
স্থানীয়রা দ্রুত ও স্থায়ী সমাধানের দাবি জানিয়ে বলেন, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা জরুরি।
নাইমুর রহমান তালুকদার/আরএআর