১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেয়ে আবেগাপ্লুত মেহেরপুরের ৯ জন

মেহেরপুরে সম্পূর্ণ মেধা ও যোগ্যতার মাপকাঠিতে ১২০ টাকা আবেদন ফি দিয়ে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৯ জন। ওয়েটিং লিস্টে রয়েছেন আরও দুইজন।
কনস্টেবল পদে উত্তীর্ণ এসব নারী-পুরুষদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেল ৫টায় মেহেরপুর পুলিশ লাইন্স ড্রিলশেডে মতবিনিময় সভা করেন জেলা পুলিশ সুপার মাকসুদা আকতার খানম।
এ সময় কনস্টেবল পদে চাকরি চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। শতভাগ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ ৯ জন প্রার্থীর অনেকে তাদের মতামত প্রকাশের সময় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন।
এসব প্রার্থীর মধ্যে অনেকেই ভ্যানচালক ও কৃষকের সন্তান, অনেকেই আবার অত্যন্ত দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। তারা শতভাগ স্বচ্ছতা, মেধা ও নিজ যোগ্যতায় চাকরি পেয়ে নিয়োগ-সংশ্লিষ্ট সবার ও বাংলাদেশ পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ ফারজানা খাতুন বলেন, দুই বছর চেষ্টা করার পর তৃতীয় বছরে মেধার ভিত্তিতে চাকরি পেয়ে আমি আমার পরিবারের স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি। কোনো আর্থিক লেনদেন ছাড়া মাত্র ১২০ টাকা আবেদন ফি দিয়ে আমি নিজের যোগ্যতায় এই চাকরি পেয়েছি।
মোমিনুল ইসলাম নামে একজন বলেন, আমি কৃষকের সন্তান। ১২০ টাকা খরচ করে পুলিশের চাকরিতে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়েছি। কখনো কল্পনাও করিনি, বিনা টাকায় আমার চাকরি হবে। আমি চাকরিতে যোগদানের পর দেশ ও জনগণের স্বার্থে কাজ করতে চাই।
আরেক উত্তীর্ণ প্রার্থী মারুফের বাবা ভ্যানচালক আমিরুল ইসলাম জানান, ছেলে পুলিশের চাকরি পাওয়াতে আশা করি আমাদের পরিবারের সচ্ছলতা ফিরে আসবে। টাকা ছাড়া ছেলের চাকরি হওয়াতে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
পুলিশ সুপার মাকসুদা আকতার খানম বলেন, সম্পূর্ণ মেধা ও যোগ্যতার মাধ্যমে প্রার্থীদের লিখিত, মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম অনুযায়ী ৯ জন উত্তীর্ণ প্রার্থীকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে। এখানে কোনো প্রকার অর্থের লেনদেন হয়নি। শতভাগ স্বচ্ছতার মধ্য দিয়ে এ নিয়োগ পরীক্ষা সম্পূর্ণ হয়েছে।
এবার ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে ৯ জনের বিপরীতে প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিং শেষে ৪৭৮ জন প্রার্থী শারীরিক মাপ ও শারীরিক সক্ষমতা যাচাই পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান। শারীরিক মাপ ও শারীরিক সক্ষমতা যাচাই শেষে ১৪৬ জন লিখিত পরীক্ষা অংশগ্রহণ করেন। লিখিত পরীক্ষায় ২৫ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়ে মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। তারমধ্যে চূড়ান্তভাবে মেধায় ৯ জন ও ওয়েটিং লিস্টে ২ জন নির্বাচিত করে মেহেরপুর জেলা টিআরসি নিয়োগ বোর্ড।
এএমকে