বেশিরভাগ চামড়া ব্যবসায়ীর গুদাম বন্ধ, কেনার আগ্রহ কম

রংপুরে চামড়া কেনা-বেচার জন্য হাজীপাড়া চামড়াপট্টি বিখ্যাত। প্রতি বছর কোরবানির ঈদকে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করেন এখানকার ক্রেতা-বিক্রেতারা। তবে গত কয়েক বছরের মতো এবারও চিত্র ভিন্ন। চামড়া কেনার ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের তেমন আগ্রহ নেই। বেশির ভাগ ব্যবসায়ী গুদাম বন্ধ করে রেখেছেন। চামড়া কেনাবেচার এই এলাকাতে এখন সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে।
চামড়া ব্যবসায়ীদের হাতে নগদ টাকা নেই। ব্যাংক থেকেও ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। বিগত দিনের বকেয়া পড়ে রয়েছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানের ট্যানারিগুলোতে। উত্তরাঞ্চলে প্রায় এক হাজার চামড়া ব্যবসায়ী টাকার অভাবে এবার চামড়া ক্রয় করতে পারবেন কি না সন্দিহান হয়ে পড়েছেন। গত বছরের মতো এবারও অর্ধেক দামে ট্যানারি মালিকরা সিন্ডিকেট করে চামড়ার দাম নিয়ন্ত্রণ করবে, এমনটা শঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
চামড়া শিল্পে সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা না থাকায় হাতে গোনা ট্যানারি মালিকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন তারা। বর্তমানে পশুর চামড়া ন্যায্য দামে বিক্রি করতে না পেরে অনেকে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। ফলে আসন্ন ঈদ-উল-আজহার কোরবানির পশুর চামড়া কেনাকে সামনে রেখে চামড়াপট্টিতে তেমন কোনো কর্মচাঞ্চল্য নেই। প্রায় ১০-১২ জন ফড়িয়া এবং হাতেগোনা ৩-৪ জন ব্যবসায়ী চামড়া কেনার প্রস্তুতি নিয়েছেন।

চামড়াপট্টি এখন অটোপট্টি
চামড়ার ব্যবসা না থাকায় এখন ঈদের দিন ছাড়া বোঝা যায় না এলাকাটির নাম চামড়াপট্টি। অথচ একসময়ে এই এলাকাতে শতাধিকের বেশি চামড়ার গুদাম ছিল। রংপুর ও ঢাকার বাইরের আড়ৎদারদের আনাগোনা ছিল নিয়মিত। চামড়া ব্যবসাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল চামড়া ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি। এসব এখন শুধুই ইতিহাস। ঈদকে ঘিরে এখন আর চামড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে সাজ সাজ রব লক্ষ্য করা যায় না।
দিন দিন গুদাম বন্ধের সঙ্গে চামড়া বিমুখ ব্যবসায়ীর সংখ্যা বেড়েছে। আগের মতো চামড়া ব্যবসার রমরমা দিন না থাকায় এখন সমিতিও বিলুপ্ত প্রায়। চামড়ার ব্যবসা ছেড়ে অনেকেই গড়ে তুলেছেন অটোবাইক ও রিকশার দোকান। এ কারণে চামড়াপট্টি এখন অটোপট্টিতে পরিণত হয়েছে।
লোকসানে চামড়া বিমুখ ব্যবসায়ীরা, বাড়ছে পেশা বদল
সরেজিমনে দেখা যায়, শাপলা চত্বর হাজীপাড়া চামড়াপট্টি সড়কের দু’পাশে ব্যাটারিচালিত অটো, অটোরিকশা ও ভ্যানের দোকানসহ অন্যান্য দোকান রয়েছে অন্তত ৫০টি। এর মধ্যে মাত্র তিনটি গুদামে নিয়মিত চামড়া কেনাবেচা করা হয়। ঈদকে ঘিরে এসব গুদামে লবণ মজুদ করা হয়েছে। সেরে নেওয়া হয়েছে গুদামের টুকটাক কাজও।
একসময়ের এই চামড়াপট্টিতে এখন চামড়ার গুদামের অস্তিত্ব সংকট। যার নমুনা দোকানগুলোর সাইনবোর্ডে তাকালে চোখে পড়ে। চামড়াপট্টির নাম পরিবর্তন করে এখন হয়েছে অটোপট্টি। এখানে শুধু অটো, রিকশা বা ভ্যান বিক্রি করাই হয় না। এই এলাকায় কয়েকটি কারখানাও গড়ে উঠেছে, যেখানে এসব তৈরি করা হয়ে থাকে। রয়েছে অটোর যন্ত্রাংশ কেনাবেচার জন্য ভাঙারি মার্কেট।
এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকরাই এক সময় চামড়ার ব্যবসায় জড়িত ছিলেন। কিন্তু একের পর এক লোকসান আর ঋণের ধকল টানতে না পেরে পেশা বদল করে এখন তারা অটোরিকশার বিক্রেতা। কেউবা জড়িয়ে অন্য পেশায়। চামড়া ব্যবসায়ীদের পেশা বদলের সাথে সাথে বদলে গেছে এলাকার নামও।
চামড়া কেনাবেচায় নীতিমালা তৈরির দাবি
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে বকেয়া টাকা তুলতে ব্যর্থ হয়ে অনেকেই চামড়ার ব্যবসা ধরে রাখতে পারেননি। আবার অনেকে চামড়া ব্যবসায় ঋণ না পেয়ে পুঁজির অভাবে পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছেন। এখন যারা বাপদাদার এই ব্যবসা ধরে আছেন, তারা হাতে গোনা কয়েকজন। তাদের দাবি, এ শিল্পকে বাঁচাতে হলে সরকারিভাবে চামড়া কেনাবেচায় নীতিমালা তৈরি, চামড়া শিল্পে ঋণের ব্যবস্থা করাসহ কাঁচা চামড়া সংরক্ষণে সরকারকে যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।
স্থানীয় প্রবীণ ব্যবসায়ী আব্দুল গাফফার জানান, দেশ স্বাধীনের আগে এই চামড়াপট্টি গড়ে ওঠে। তখন এখান থেকেই নিয়মিত কলকাতায় যেত চামড়া। শুরুতে দেড় শতাধিকের বেশি ব্যবসায়ী চামড়া কেনাবেচার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ওই সময় চামড়ার ব্যবসার এতই প্রসার ঘটে, লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করে রাখা চামড়ার দুর্গন্ধে আশপাশের মানুষ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে পারত না। অথচ এখন সেই চামড়াপট্টিতে চামড়া নেই।
তিনি আরও বলেন, সময়মতো বকেয়া টাকা তুলতে ব্যর্থ হওয়া, চামড়ার ভালো বাজার না পাওয়াসহ নানা সমস্যার কারণে চামড়াপট্টিতে বর্তমানে হাতে গোনা কয়েকজন ব্যবসা করছে। পেশা বদল করে নেওয়া বেশিরভাগ চামড়া ব্যবসায়ী এখন শুধু ঈদুল আজহাতে মৌসুমী ব্যবসায়ী হিসেবে কোরবানির পশুর চামড়া কেনাবেচা করেন।
হাটগুলোর করুণ দশা, নেই আগের মতো আমদানি
এ অঞ্চলে চামড়া কেনাবেচার সবচেয়ে বড় হাট হচ্ছে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী থানার কালিবাড়ী হাট। সপ্তাহে দুদিন হাট বসে। চামড়াপট্টি থেকে সংখ্যাগরিষ্ঠ ব্যবসায়ী চামড়া নিয়ে সেখানে যান। এ ছাড়া লালমনিরহাটের বড়বাড়ি, চাঁপারহাট, রংপুরের তারাগঞ্জ-বদরগঞ্জেও ব্যবসায়ীরা চামড়া কেনাবেচা করেন। এখন হাটেও আগের মতো চামড়ার আমদানি হয় না। নেই আগের মতো চামড়ার কেনাবেচা। কারও কারও মতো চামড়াগুলোর অবস্থাও এখন চামড়াপট্টির মতো করুণ।
চামড়াপট্টি এলাকার একরামুল হক, মশিয়ার রহমান, আব্দুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন চামড়া ব্যবসায়ী জানান, আগে হাটগুলোতে রিলায়েন্স, বিএলসি, আরকে লেদার, আজমেরি লেদার, পান্না লেদার, মুক্তা ও মুক্তি ট্যানারিসহ বিভিন্ন ট্যানারির প্রতিনিধিরা আসতেন। এখন তাদের সংখ্যা কমে গেছে। যারা হাটে আসেন তাদের মধ্যে সিন্ডিকেট রয়েছে। এ কারণে চামড়াপট্টি থেকে আগের মতো অন্য হাটে চামড়ার আমদানিও হয় না।
কোনো কারণে যদি একটি ট্যানারির প্রতিনিধি হাটে না আসে, তাহলে চামড়ার দাম বৃদ্ধির কোনো সুযোগ থাকে না। ট্যানারি মালিকদের নির্ধারিত দামে চামড়া বিক্রি করতে হয়। তখন বেশি দামে চামড়া কেনা থাকলেও কম দামে বিক্রি ছাড়া কোনো উপায় থাকে না।
যা বলছেন প্রান্তিক চামড়া ব্যবসায়ীরা
চামড়ার ব্যবসা ছেড়ে দীর্ঘদিন ধরে অটোরিকশার ব্যবসা করছেন মোখলেছুর রহমান ও আকমাল হোসেন। এই দুই ব্যবসায়ী জানান, চামড়া সংরক্ষণ করে রাখবেন সেই সুযোগ নেই। নগদ দামে চামড়া কিনে বেশ কিছু টাকা বাকি রেখে ট্যানারিগুলোতে চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে। কিন্তু প্রাপ্য বকেয়া টাকার বিপরীতে কোনো প্রমাণাদি তাদের কখনো দেওয়া হয় না। অতীতে প্রসিদ্ধ ট্যানারি মালিকের মৃত্যুর কারণে চামড়াপট্টির অনেক ব্যবসায়ীর বকেয়া লাখ লাখ টাকা আজও তুলতে না পেরে মূলধনের অভাবে পথে বসে গেছেন।
মূলত সুষ্ঠুভাবে মনিটরিং না থাকায় চামড়া শিল্পে ধস নেমেছে বলে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। বর্তমানে ব্যবসায়ীদের আর্থিক অবস্থা ভালো নেই। বিশেষ করে হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি স্থানান্তরে প্রভাব পড়েছে। এ কারণে ঢাকাতেও চামড়া কেনার চাহিদা কম। আর ঢাকার বাইরের ব্যবসায়ীদের অনেকেই আগের পাওনা টাকা পাননি। এখন নগদ টাকায় চামড়া কিনে নতুন করে লোকসানের ভয়ে আছেন তারা। এ কারণে অনেকেই চামড়া কিনবেন কি না তা নিয়ে দ্বিধায় রয়েছেন।
জানা গেছে, রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের প্রতি বছর কোরবানির সময় প্রতিটি জেলায় দুই থেকে আড়াই লাখ পিচ চামড়ার আমদানি হতো। সেই হিসাবে প্রতি বছর কোরবানির সময় ৩৫ থেকে ৪০ লাখ পিচ গরুর চামড়া আমদানি হয়। ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা গত কয়েক বছরের মতো এবারও সেই লক্ষ্য হোচট খেতে পারে। রংপুরে কয়েক বছর আগেও শতাধিকের বেশিও ওপর চামড়ার গুদাম ছিল। বর্তমানে তা নেমে এসেছে ৩-৪টিতে।
চমড়া ব্যবসায়ী শামছুল হক বলেন, চামড়ার বাজারে ধস নেমেছে। ট্যানারি ছাড়া স্থানীয়ভাবে চামড়া সংরক্ষণে বিকল্প কোনো উপায় নেই। এখন আমদানিও কম। লবণের দাম তো বেড়েই চলেছে। এতো কিছুর মাঝেও ট্যানারি মালিকেরা সরকার থেকে ঋণ পাচ্ছে। কিন্তু আমাদের মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ঋণ সুবিধার বাইরে রয়েছে। আমাদের ঋণ দেওয়া হয় না। অথচ ট্যানারি মালিকেরা চামড়া ব্যবসার নামে ঋণ নিয়ে তা অন্যখাতে বিনিয়োগ করছে।
বাড়ছে পেশা বদল, নেই সেই সুদিন
চামড়ার ব্যবসা ছেড়ে বর্তমানে অটোরিকশার দোকান দিয়েছেন আরিফ হোসেন। তরুণ এই ব্যবসায়ী বলেন, চামড়া বিক্রি করে বছরের পর বছর ধরনা দিয়েও বকেয়া টাকা তুলতে পারিনি। তাই বাপদাদার চামড়ার ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছি। শুধু আমি নই, আমার মতো অনেকে পুঁজি হারিয়ে আজ পথে বসেছে। পেটের তাগিদে এখন ধার-দেনা করে অটোরিকশার ব্যবসা করছি।
আরিফের মতো পেশা বদল করেছেন সেলিম মিয়া, শফি মাস্টারসহ শতাধিকের বেশি চামড়া ব্যবসায়ী। এদিকে চামড়ার ব্যবসা না থাকায় স্থানীয় শ্রমিকরাও পড়েছেন বিপাকে। এখন সামান্য আয়ে সংসার চালাতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানান আবেদ আলী, রন্টু মিয়া নামে দুই চামড়া শ্রমিক। তারা জানান, আগে চামড়ার রমরমা ব্যবসা ছিল। এখন সেই সুদিন নেই। চামড়ার গুদাম কমে যাওয়ায় এখন আগের মতো আয় হয় না। আগে যেখানে প্রতিদিন এক থেকে দেড় হাজার টাকা আয় হতো, এখন ২০০-৩০০ টাকাও রোজগার হয় না।
চামড়া ব্যবসায়ীদের অভিযোগ নিয়ে কথা বলার মতো ট্যানারি মালিকদের প্রতিনিধি নেই চামড়াপট্টিতে। তবে সরাসরি ঢাকা ও যশোরে চামড়া ব্যবসা করেন এমন একজন নাম প্রকাশে অনীহা জানিয়ে বলেন, গত কয়েক বছর ধরে রংপুরে চামড়ার আমদানি খুবই কম। এবারও একই শঙ্কা রয়েছে। আর যারা ট্যানারি মালিকদের কাছে চামড়ার টাকা পেতেন, তাদের বেশির ভাগের টাকা পরিশোধ হয়েছে। এখন হয়তো হাতে গোনা কয়েকজনের পাওনা রয়েছে।
চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে সরকার
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোরবানির গরুর লবণযুক্ত চামড়ার দাম গতবছরের চেয়ে এবারও ৫ টাকা বাড়িয়ে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। আর ঢাকার বাইরে ৫ টাকা বাড়িয়ে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা করা হয়েছে। একই সঙ্গে খাসি ও বকরির চামড়ার দাম ২ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
গত ২৫ মে এক সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন জানান, ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর খাসির লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট চামড়ার দাম ২২ থেকে ২৭ টাকা এবং বকরির চামড়া ২০ থেকে ২২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকায় গরুর চামড়া প্রতি পিস ১৩৫০ টাকার নিচে কেনা যাবে না এবং ঢাকার বাইরের চামড়া ১১৫০ টাকার নিচে কেনা যাবে না।
তিনি আরও জানান, জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে ঈদের পর অন্তত ১৫ দিন পর্যন্ত কাঁচা চামড়া স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় সংরক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে চামড়া সংরক্ষণ, হাট-বাজার ব্যবস্থাপনাসহ তিন মাসের জন্য কাঁচা চামড়া এবং ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানির শর্ত শিথিল করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এছাড়া ঢাকায় ১০ দিনের আগে কাঁচা চামড়া প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
লবণ সিন্ডিকেট ও ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কা
সরকারের বেধে দেওয়া দামে চামড়া কেনা-বেচা সম্ভব নয় বলে দাবি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। রংপুর জেলা চামড়া ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি মো. আফজাল হোসেন বলেন, চামড়া কিনে কোথায় বিক্রি করা হবে, এ নিয়েই ব্যবসায়ীরা বেশি চিন্তিত। এখন চামড়ার দাম নেই। তার মধ্যে আর্থিকভাবে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত। দেশের প্রায় দুই শতাধিত ট্যানারির মধ্যে এখন হাতে গোনা কয়েকটি ট্যানারি চালু রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কেউ চামড়া কিনে নতুন করে লোকসানের বোঝা ভারী করতে চাইছেন না। তারপরও অনেকেই চামড়া কিনবেন। সেক্ষেত্রে সরকারের বেধে দেওয়া দামের চেয়ে কম-বেশি হতে পারে।
তিনি বলেন, চামড়া সংরক্ষণে ব্যবহৃত লবণের দাম বেড়েছে। সরকার লবণ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি। একদিকে লবণ সিন্ডিকেট অন্যদিকে চামড়ার ন্যায্য দাম না পাওয়ার শঙ্কা, এ দুই সিন্ডিকেটের কারণে প্রান্তিক পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা হাতগুটিয়ে নিচ্ছেন।
ভালো দাম না পাওয়ার কারণ প্রসঙ্গে আফজাল হোসেন বলেন, চামড়ার সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থা গড়ে না উঠায় বর্তমানে চামড়া ব্যবসায়ীরা ভালো দাম পাচ্ছেন না। এমনিতে দীর্ঘদিন থেকে ট্যানারি মালিকদের কাছে এখানকার ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ টাকা বকেয়া পড়ে আছে। ব্যবসায়ীদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ পেশা পরিবর্তন করেছে অথবা পুঁজি হারিয়ে পথে বসেছে। তাই চামড়া শিল্পে ব্যাংক ঋণ চালু করাসহ সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানাচ্ছি।
এমএএস