দাদার কবরের পাশে শায়িত তুষ্টি

নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় প্রয়াত দাদা আফর উদ্দিনের কবরের পাশে শায়িত হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান তুষ্টি। সোমবার (৭ জুন) সকাল ৯টায় উপজেলার সুখারী ইউনিয়নের নীলকণ্ঠপুর গ্রামের তহসিলের মাঠে তুষ্টির নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজা শেষে তুষ্টিকে গ্রামের বাড়ির আঙিনায় পারিবারিক কবরস্থানে তার দাদা আফর উদ্দিনের কবরের পাশে দাফন করা হয়।
এ সময় তুষ্টির দাফনকে কেন্দ্র করে উপস্থিত পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনসহ এলাকার লোকজনের মধ্যে করুণ আহাজারি শুরু হয়। চারপাশের পরিবেশ যেন শোকে স্তব্ধ হয়ে যায়। তুষ্টির দাফনকাজে তার পরিবার, এলাকাবাসী, আত্মীয়স্বজনসহ তার সহপাঠি বন্ধুবান্ধবও অংশ নেন।
দাফনের সময় বাড়ির আঙিনায় কবরের পাশে বারবারই মূর্ছা যাচ্ছিলেন তুষ্টির বাবা আলতাফ উদ্দিন, মা হেনা আক্তার, চাচা মোফাজ্জল হোসেন ও তুষ্টির বন্ধু সহপাঠী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃ-বিজ্ঞান বিভাগে পড়ুয়া রাজু নামের এক শিক্ষার্থী।
তুষ্টির মা বিলাপ করতে করতে বলছিলেন, তুষ্টি, মা তুই কই গেলিরে। তোরে দেখার জন্য কত লোকজন আইছেরে, মা। আমার সব স্বপ্ন শেষ কইরা তুই কই গেলিরে, মা।
চাচা মোফাজ্জল হোসেন কান্না করে বলছিলেন, আর আমার ঢাকা যাওনের কোনো দরকার নাই। যার লাইগ্গে ঢাকা যাইতাম, সেই তুষ্টি মা-ই নাই। ঢাকা গিয়া আর কী করবাম।
আরেক চাচা প্রভাষক ইমাম হোসেন। তিনিই ছোটবেলা থেকে তুষ্টির পড়াশোনার সার্বিক দেখাশোনা করেছেন। তুষ্টির লাশ দাফনের সময় তিনি শোকে নির্বাক হয়ে চারপাশে পায়চারি করছিলেন।
উল্লেখ্য, করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে ইসরাত জাহান তুষ্টি অন্য কয়েকজন সহপাঠীর সঙ্গে ঢাকার আজিমপুর এলাকার সরকারি কোয়ার্টারের একটি বাসায় বসবাস করে পড়াশোনা চালিয়ে আসছিলেন। শনিবার (৫ জুন) মধ্যরাতে তার এক রুমমেট তাকে ওই বাসার বাথরুমে পড়ে থাকতে দেখে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে রোববার সকালে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বাথরুম থেকে তুষ্টির মরদেহ উদ্ধার করে। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মো. জিয়াউর রহমান/এনএ