ফেনীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের সংস্কারকাজ শুরু, পানি নেমে যাওয়ায় স্বস্তি

টানা বৃষ্টি ও ভারতীয় উজানের পানিতে ফেনীর ফুলগাজীতে মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর দুটি স্থানে বাঁধ ভেঙে লোকালয় প্লাবিত হয়েছে। তবে মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের সংস্কারকাজ শুরু হওয়ায় লোকালয়ে পানি প্রবেশ বন্ধ হয়েছে। এতে জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে।
শনিবার (২১ জুন) দুপুর থেকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের বণিকপাড়া গ্রামে বাঁধের ভাঙন অংশে মেরামত কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
সরেজমিনে দেখা যায়, লোকালয়ে পানি কমে যাওয়ায় সকাল থেকে নিরাপদে আশ্রয় নেওয়া বাসিন্দারা নিজ নিজ বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। তবে কিছু ঘরে কাদা থাকায় অনেকে ভোগান্তিতে পড়েছেন। নদীর পানি কমার সঙ্গে স্পষ্ট হয়েছে সড়কের ক্ষত চিহ্ন। এছাড়া বণিকপাড়ায় মুহুরী নদীর ২০ মিটার ভাঙন অংশ মেরামতে জিও ব্যাগ ও বালুর বস্তা ফেলেছে পাউবো। ক্ষতিগ্রস্ত অংশে ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। বৃষ্টি না হলে সন্ধ্যার মধ্যেই ভাঙন অংশের মেরামত কাজ শেষ হওয়ার কথা বলছে কর্তৃপক্ষ।

রবিউল হাসান নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, এবার জমিতে ফসল না থাকায় তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ঘরে পানি ঢুকে কর্দমাক্ত হয়েছে। তবে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে না আনলে প্রতিবছরই এ দুর্ভোগ পোহাতে হবে।
মঞ্জুনা আক্তার নামে জগতপুর এলাকার আরেক বাসিন্দা বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে জুন-জুলাই মাসে এখানকার বাঁধ ভাঙার চিত্র নিয়মে পরিণত হয়েছে। কর্তৃপক্ষের দায়সারা কাজের কারণে হাজারো মানুষ কষ্ট করছে৷ গত বছরের বন্যার ক্ষত এখনো শুকায়নি। তার আগেই আমাদের পানিতে ভাসতে হয়েছে। খাবার ও সুপেয় পানি নিয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহরিয়া ইসলাম বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংস্কার কাজের তদারকি করা হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের অংশগুলো শনাক্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জন্য বলা হয়েছে। পানিবন্দি মানুষদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে।

ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আকতার হোসেন মজুমদার বলেন, মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীতে টেকসই বাঁধ নির্মাণে নতুন একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রায় ৩৫০ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দের প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এ অঞ্চলের মানুষ প্রতিবছর বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে।
আরও পড়ুন
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাতে ভারী বৃষ্টি ও ভারতীয় উজানের পানিতে মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর দুইটি অংশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে।
তারেক চৌধুরী/এমএন