জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত হাফেজ তৌফিকের রহস্যজনক মৃত্যু

জাতীয় হিফজ প্রতিযোগিতায় একাধিকবার পুরস্কারপ্রাপ্ত হাফেজ মোহাম্মদ তৌফিক সিয়ামের (১৭) রহস্যজনক মৃত্যুকে ঘিরে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। ঢাকার একটি মাদরাসায় তার মৃত্যু হয়। পরিবার দাবি করছে এটি ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’। যদিও মাদরাসা কর্তৃপক্ষ এটিকে ‘আত্মহত্যা’ বলে প্রচার করেছে।
রোববার (২০ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে তৌফিকের মৃত্যুর খবর মাদরাসা কর্তৃপক্ষ তার পরিবারকে ফোনে জানায়। খবর পেয়েই ঢাকায় ছুটে যান স্বজনরা। সেখানে গিয়ে তারা ঝুলন্ত মরদেহের ‘অস্বাভাবিক’ অবস্থান দেখে সন্দেহ প্রকাশ করেন।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. সালাউদ্দিন সরদারের বড় ছেলে তৌফিক রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অবস্থিত ‘মারকাজু ফয়জিল কোরআন আল ইসলামিয়া’ মাদরাসায় পড়াশোনা করতেন।
তৌফিকের বাবা সালাউদ্দিন সরদার বলেন, ‘আমার ছেলে ধর্মভীরু, সৎ ও পড়াশোনায় অত্যন্ত মনোযোগী ছিল। আত্মহত্যা করার প্রশ্নই আসে না। তাকে হত্যা করে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা নিরপেক্ষ তদন্ত চাই।’
পরিবারের আরেক সদস্য এম শরিফ উদ্দিন বলেন, ‘মরদেহটি বাথরুমে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। এক পা ছিল টয়লেট প্যানের ভেতর, আরেক পা মেঝেতে ভাঁজ হয়ে পড়েছিল। এভাবে আত্মহত্যা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এটা হত্যাকাণ্ড।’
তৌফিকের চাচা আকছেদ আলী বলেন, খবর পেয়ে আমি দ্রুত মাদরাসায় যাই। সেখানে গিয়ে দেখি পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করছে। একটি ছবিতে দেখা যায়, তৌফিকের একটি পা নিচে পড়ে আছে। আমি নিজেই ময়নাতদন্তের অনুরোধ করেছি।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে দারুস সালাম থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতের শরীরে দুই জায়গায় বেতের আঘাতের চিহ্ন ছিল। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলেই বিস্তারিত জানা যাবে।’
তৌফিকের মৃত্যুর খবরে তার নিজ এলাকা সাতক্ষীরার গাবুরাসহ আশপাশে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এলাকাবাসী ও স্বজনদের দাবি, ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে প্রকৃত সত্য উদঘাটন এবং দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।
ইব্রাহিম খলিল/আরকে